

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সংঘাতকে ঘিরে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল আর. সিং। তিনি দাবি করেছেন, মে মাসে অনুষ্ঠিত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের একটি সীমান্ত সংঘাতে পাকিস্তানকে সরাসরি সামরিক সহায়তা দিয়েছে চীন ও তুরস্ক। চারদিনব্যাপী চলা এই সংঘাতে ভারত এককভাবে পাকিস্তানের নয়, বরং তিন দেশের সমন্বিত সামরিক পরিকল্পনার মুখোমুখি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
জেনারেল সিং বলেন, চীন এই সংঘাতকে পাকিস্তানে তাদের রপ্তানিকৃত অস্ত্র ও প্রযুক্তির কার্যকারিতা পর্যালোচনার একটি ‘লাইভ ল্যাবরেটরি’ হিসেবে ব্যবহার করেছে। তিনি এ ঘটনাকে ‘ধার করা ছুরি দিয়ে হত্যা’র কৌশলের সঙ্গে তুলনা করেন। তার ভাষায়, “চীন সরাসরি হামলায় অংশ না নিয়ে পাকিস্তানকে ব্যবহার করে ভারতের উপর আঘাত হেনেছে।” তিনি আরও জানান, চীন পাকিস্তানকে রিয়েল-টাইম গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছে, যা ভারতের জন্য গুরুতর কৌশলগত হুমকি।
তুরস্কের ভূমিকা নিয়েও জেনারেল সিং সতর্ক করেন। যদিও তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি, তবে জানান— তুরস্ক পাকিস্তানকে সামরিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সহায়তা দিয়ে সহযোগিতা করেছে। এটি দক্ষিণ এশিয়ায় একটি নতুন সামরিক জোটের আভাস দিতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এদিকে, ভারতীয় কংগ্রেস দল সংসদে এই ইস্যুতে জরুরি আলোচনার দাবি জানিয়েছে। দলের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, “২০২০ সালের ১৯ জুন প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছিলেন, চীন আমাদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেনি। অথচ এখন সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান নিজেই বলছেন চীন পাকিস্তানকে গোয়েন্দা সহায়তা দিচ্ছে— এই স্ববিরোধিতা স্পষ্ট এবং তা সংসদে আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।”
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনাগুলো যদি সত্য হয়, তবে ভারতকে এক বহুমাত্রিক কৌশলগত চাপে পড়তে হবে। চীন-পাকিস্তান-তুরস্কের মধ্যে এমন সামরিক সহযোগিতা ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন উত্তেজনার সূচনা করতে পারে।
পাকিস্তান, চীন ও তুরস্কের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি, দ্য ইকোনমিক টাইমস