

পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে লক্ষ্যভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, এসব জায়গা থেকে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। এ অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিন্দূর’।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, “সন্ত্রাসীদের অবকাঠামোতে আঘাত হানা হয়েছে, যেখান থেকে ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা ও কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। হামলাগুলো ছিল অত্যন্ত নির্দিষ্ট, পরিমিত এবং উত্তেজনা এড়ানোর জন্য নিয়ন্ত্রিত।” তারা আরও দাবি করে, পাকিস্তানের কোনো সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি।
হামলার ধরন নিয়ে ভারত বিস্তারিত কিছু না বললেও, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, “ভারত মধ্যরাতে কোটলি, ভাওয়ালপুর ও মুজাফফরাবাদে কাপুরুষোচিত হামলা চালিয়েছে।” এতে এক শিশু নিহত এবং দুই নারী ও পুরুষ আহত হয়েছেন। আরও এক মুখপাত্র জানান, হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল পাঁচটি, যার মধ্যে দুটি মসজিদ ছিল। প্রাথমিকভাবে তিনজন নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে আজাদ কাশ্মিরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে একাধিক বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়। বিস্ফোরণের পর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ভারতীয় কাশ্মীরের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও গোলাগুলির শব্দ, বিস্ফোরণ এবং আকাশে যুদ্ধবিমান দেখা গেছে।
ভারতের দাবি, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে হিন্দু পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। তারই প্রতিশোধ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে পাকিস্তান সেই হামলার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং আগে থেকেই ভারত হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে—এমন গোয়েন্দা তথ্য থাকার কথাও জানিয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে লিখেছে, “ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে। জয় হিন্দ।”
এই ঘটনার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।