ড্রেনেজ দুর্বলতা ও অপরিকল্পিত নগরায়নেই নগরবাসীর দুর্ভোগ, হাঁটু পানি পেরিয়ে গন্তব্যে

গত দুই দিনের স্বল্প সময়ের বৃষ্টিতেই ময়মনসিংহ নগরীর বহু এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। রোববার ভোর ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত মাত্র তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে নগরীর মূল সড়ক থেকে শুরু করে গলিপথ পর্যন্ত পানিতে ডুবে যায়, ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।

জলাবদ্ধতার কারণে দোকানপাট, বসতঘর এবং ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানেও পানি ঢুকে পড়ে। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা এবং বিপাকে পড়েছেন অনেক পরিবার। বাসিন্দাদের অভিযোগ—প্রতিবারই সামান্য বৃষ্টিতেই এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, অথচ কার্যকর সমাধান নেই।

ময়মনসিংহ আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৬টা থেকে রোববার সকাল ৬টা) ৯৪ মিলিমিটার এবং রোববার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত আরও ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক নির্মল চন্দ্র মজুমদার জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পূর্ব দিকের নিম্নচাপ ভারতের উড়িষ্যার দিকে অবস্থান করছে এবং তা বাংলাদেশে প্রবেশের আশঙ্কা নেই। তিনি আরও জানান, বাতাসের গতিবেগ ছিল ৪ থেকে ৬ নটিক্যাল মাইল এবং আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।

নগরীর বাঘমারা, বলাশপুর, পালপাড়া, মাদ্রাসা কোয়ার্টার, চরপাড়া, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, সানকিপাড়া, গোলকিবাড়ী, নতুনবাজার, গাঙ্গিনারপাড়, খাগডহর এবং রেললাইন বস্তি এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুপানি জমে যায়। রাস্তাঘাট পানির নিচে চলে যাওয়ায় নগরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেককে কোমর পানি পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে। নিচু এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের ঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় তাদের অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে পড়তে হয়।

নগরবাসীর অভিযোগ, দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থা এবং অপরিকল্পিত নগর উন্নয়নই এর মূল কারণ। তাদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “নগরীর বিভিন্ন স্থানে ড্রেন পরিষ্কারের কাজ চলমান রয়েছে। পাশাপাশি ১২০ কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে, যা শেষ হতে কিছুটা সময় লাগবে। তবে আগামী বছর নাগরিকরা এর সুফল পাবেন বলে আশা করছি।”

তিনি আরও জানান, নগরবাসীর ভোগান্তি কমাতে কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে কাজ করছে এবং সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান নিশ্চিতে নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।