আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)“শিশু অধিকার রক্ষায় বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত হযরত মুহাম্মদ সা: এর দৃষ্টান্ত”

print news

মোঃ শাহজাহান বাশার ,সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

Img

আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের অধিকার রক্ষায় যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেননি, শিশুদের প্রতিও অগাধ ভালোবাসা ও দায়িত্বশীল আচরণ প্রদর্শন করেছেন। তাঁর শিক্ষা ও আদর্শ আজকের পৃথিবীতেও শিশু অধিকার ও কল্যাণ রক্ষায় আলোকবর্তিকা হয়ে আছে।

বর্তমান বিশ্বে শিশুরা নানা কারণে নিরাপদ নয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা, যুদ্ধ-বিগ্রহ, সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন এবং সহিংসতায় প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছে নিরীহ শিশুরা। ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, মিয়ানমারসহ পৃথিবীর বহু প্রান্তে এখনো শিশুরা নিরাপদ আবাসন ও সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত।

অতীতে যেমন শিশুরা অধিকার বঞ্চিত ছিল, তেমনি বর্তমান সময়েও শিশুর অধিকার প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু এই অন্ধকার ভেদ করে মানবতার মুক্তির আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছিলেন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তিনি শিশুদের অধিকার রক্ষায় যুগান্তকারী উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং ছোটদের প্রতি অপরিসীম মমতা প্রদর্শন করেছেন।

পবিত্র কোরআনে শিশুদের গুরুত্বের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ রয়েছে। সূরা আল-বালাদে (আয়াত ১-৩) সন্তানের গুরুত্ব ও জন্মদাতার মর্যাদা বর্ণিত হয়েছে। সূরা মারইয়ামে (আয়াত ৭) যাকারিয়া আ.-এর দোয়ার প্রেক্ষিতে ইয়াহইয়া আ.-এর জন্মের সুসংবাদকে মহিমামণ্ডিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। আবার সূরা ফুরকান (আয়াত ৭৪)-এ সন্তানকে চোখের প্রশান্তি বলা হয়েছে।

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদের স্নেহ করা, ভালোবাসা প্রদর্শন, তাদের সঙ্গে ওয়াদা করলে তা পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি সন্তানের সদাচার শিক্ষা দানকে দান-খয়রাতের চেয়ে উত্তম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিশুদের জন্মের পর নামকরণ, আযান, আকীকা, তাহনীক ও খাতনা থেকে শুরু করে তাদের সঠিক লালন-পালন, নৈতিক শিক্ষা, ভরণপোষণ ও ভালোবাসা প্রদানের বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি শিশুদের প্রতি দয়া প্রদর্শনকে ঈমানদারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

আজকের বিশ্বে যখন শিশু অধিকার নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে, তখন নবীজীর জীবনদর্শনই হতে পারে সর্বজনীন সমাধান। তাঁর শিক্ষা ও আদর্শ অনুসরণ করলে শিশুদের অধিকার সুরক্ষিত হবে, তারা নিরাপদ ও সুন্দর জীবন পাবে। তাই আসুন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর এ দিনে আমরা সবাই মহানবীর দেখানো পথে চলার প্রতিজ্ঞা করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *