

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “আমরা পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হিসেবে দাঁড়াতে চাই।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের আহ্বান জানাই অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক চুক্তি পুনর্লিখনের জন্য, পাশাপাশি সামাজিক ব্যবসা, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ক্ষুদ্রঋণের ভূমিকা অন্বেষণের জন্য, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করতে সহায়তা করবে।”
গতকাল কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত ‘আর্থনা শীর্ষ সম্মেলন–২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল “আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান।” সম্মেলনের মূল বক্তা হিসেবে অধ্যাপক ইউনূস তার প্রবন্ধে মানবতা, ন্যায়বিচার এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
ফিলিস্তিন ও রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ
অধ্যাপক ইউনূস তার বক্তৃতায় ফিলিস্তিনে চলমান মানবিক বিপর্যয় ও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখ রোহিঙ্গার দুরবস্থার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “মানবাধিকারের প্রতি অবজ্ঞা এবং বিচারহীনতা যেকোনো উন্নয়নের পথে বড় হুমকি। সংকটময় বিশ্বে যুদ্ধ ও সংঘাত মানুষের অধিকার খর্ব করে এবং অর্থনীতি ধ্বংস করে।” তিনি বিশ্ব সম্প্রদায়কে এই সংকটগুলোর প্রতি উদাসীন না থাকার আহ্বান জানান।
কাতারের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক
সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূস কাতার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ও কাতারের আমিরের মা শেখ মোজা বিনতে নাসেরের সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়া কাতারের উন্নয়ন তহবিলের চেয়ারম্যান শেখ থানি বিন হামাদ বিন খালিফা আল-থানি ও কাতার চ্যারিটির আন্তর্জাতিক কার্যক্রমের সহকারী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাওয়াফ আবদুল্লাহ আল হামাদির সঙ্গেও তার বৈঠক হয়।
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
জ্বালানি সহযোগিতায় আগ্রহ
এছাড়াও আর্থনা সামিটের ফাঁকে কাতারের জ্বালানিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সাদ বিন শেরিদা আল কাবির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ড. ইউনূস। সেখানে বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, কাতার থেকে আরও বেশি পরিমাণ এলএনজি আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে।