ইতালির ভিসা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি, আজ নির্ধারিত হতে পারে ভাগ্য

print news
img

ইতালিতে বৈধ পথে কাজের আশায় অপেক্ষমাণ প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর ভাগ্য নির্ধারণ হতে যাচ্ছে আজ। ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসি দুইদিনের সফরে আজ ঢাকা আসছেন। সফরে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর করবেন। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পর্যায়ক্রমে লক্ষাধিক দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী ইতালিতে পাঠানোর পথ সুগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষা করছেন অনেক ভিসা আবেদনকারী, যারা ইতালিতে স্পন্সর ভিসার আওতায় যেতে চান। কিন্তু দালালদের ফাঁদে পড়ে কিংবা ভুল তথ্য ও ভুয়া কাগজপত্র জমা দেওয়ার কারণে তাঁদের আবেদন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসব ভুয়া নথিপত্র যাচাই করতে সময় লাগছে, তাই অধিকাংশ ভিসার সিদ্ধান্ত ঝুলে রয়েছে।

ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে গত ৩১ মার্চ থেকে ই-মেইল ভিত্তিক অ্যাপয়েন্টমেন্ট সিস্টেম চালু করেছে ভিএফএস গ্লোবাল। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, এ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এবং এতে কোনো দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীর প্রয়োজন নেই। বরং ভিন্ন কোনো উৎস থেকে তথ্য নিয়ে আবেদনকারীরা প্রতারিত হচ্ছেন।

ইতালির অভিবাসন নীতিতে নতুন করে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে আলবেনিয়া হয়ে যারা অবৈধভাবে ইতালি প্রবেশ করেন, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির সরকার অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হচ্ছে, ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর ভিসা জটিলতা নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। আজ বিকেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এবং কাল সকালে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে ভিসা জট, ‘নুল্লা ওস্তা’র বৈধতা, ভুয়া কাগজপত্র ইস্যু এবং দুই দেশের মধ্যে জনশক্তি রপ্তানির ভবিষ্যৎ রূপরেখা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হবে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরে ইতালি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার শ্রমিক নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তবে দুঃখজনকভাবে সে তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই। ফলে হাজার হাজার কর্মী এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। প্রবাসী বাংলাদেশিদের আশা, এই সফরের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতালির শ্রমবাজারে বাংলাদেশের জন্য একটি স্থায়ী ও শক্তিশালী সুযোগ তৈরি করতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *