

তেল আবিবের আকাশজুড়ে সাইরেনের শব্দ, আতঙ্ক আর ধোঁয়ার কুণ্ডলি—মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা এখন চরমে। গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন ও অবরোধের জবাবে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করেছে। ১০ জুন, মঙ্গলবার পরিচালিত এই অভিযানে তারা দুটি উন্নত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে রয়েছে হাইপারসনিক ‘ফিলিস্তিন-২’ এবং ‘জুলফিকার’ নামের আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্র। ইয়েমেনি বাহিনীর দাবি, ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর একটি ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করে সরাসরি বিমানবন্দরে আঘাত হানে।
এই হামলার পরপরই তেল আবিব ও এর আশপাশের এলাকায় বিমান চলাচল ব্যাহত হয়। জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ। শহরের আকাশজুড়ে বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং বিমান চলাচলে দেখা দেয় অচলাবস্থা। হামলার জবাবে ইয়েমেনি বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও অবরোধ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তারা তাদের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা তেল আবিবের সব ফ্লাইট অবিলম্বে স্থগিত করে। একইসঙ্গে হোদেইদাহ বন্দরে ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, হাইফা বন্দর এখন একটি “মনোনীত লক্ষ্যবস্তু” এবং ওই বন্দরের সঙ্গে যুক্ত সকল কোম্পানিকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে ইয়েমেন প্রথমবারের মতো ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ডে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দাবি করল, যা মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে এক নতুন মোড় আনতে পারে। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, এটি ইরান, ইসরায়েল ও ইয়েমেনকে নিয়ে ত্রিমুখী সংঘাতের দিকে গড়াতে পারে, যার পরিণতি হতে পারে এক ভয়াবহ আঞ্চলিক যুদ্ধ। ইসরায়েল এখনো ক্ষয়ক্ষতির আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি, তবে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।