

ইরানের সিস্তান-বালুচেস্তান প্রদেশের মেহারিস্তান জেলায় এক মর্মান্তিক ঘটনায় পাকিস্তানের আটজন নাগরিক গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার রাতে সংঘটিত এই হামলায় অজ্ঞাত সশস্ত্র হামলাকারীরা একটি ওয়ার্কশপে ঢুকে নির্বিচারে গুলি চালায় এবং পরে পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার শ্রমিকরা পাকিস্তানের দক্ষিণ পাঞ্জাবের বাসিন্দা
নিহত আটজনই পাকিস্তানের দক্ষিণ পাঞ্জাবের বাহাওয়ালপুর জেলার বাসিন্দা। তারা ইরানে গাড়ির ডেন্টিং, পলিশ, রঙ ও মেরামতের কাজ করতেন এবং একসঙ্গে একটি কার ওয়ার্কশপে থাকতেন।
বিএনএ’র দায় স্বীকার
নিষিদ্ধঘোষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বেলুচিস্তান ন্যাশনাল আর্মি (BNA) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। সংগঠনটি একটি বিবৃতিতে বলেছে, তাদের টার্গেট ছিল পাকিস্তানি নাগরিকেরা। যদিও এর পেছনে তাদের উদ্দেশ্য বা রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট নয়।
ইরানের প্রতিক্রিয়া ও তদন্ত
ইরানি কর্তৃপক্ষ জানায়, এই বর্বরোচিত হামলার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দায়ীদের খুঁজে বের করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনী ইতিমধ্যেই এলাকাটি ঘিরে তদন্ত চালাচ্ছে।
পাকিস্তানের প্রতিবাদ ও কূটনৈতিক বার্তা
ঘটনার পর পাকিস্তান ইরানের কাছে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দোষীদের চিহ্নিত করে বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চয়তার দাবি জানিয়েছে। ইসলামাবাদ বলেছে, এই হত্যাকাণ্ড চরম উদ্বেগজনক এবং এর দায় যারা নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ইরানের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পাকিস্তানে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূত রেজা আমিরি মোগাদাম বলেছেন, “সন্ত্রাসবাদ এখন একটি আঞ্চলিক সমস্যা হয়ে উঠেছে। এটি শুধুমাত্র একটি দেশের সমস্যা নয়, বরং গোটা অঞ্চলকে হুমকির মুখে ফেলছে।”
পূর্বের উত্তেজনার পটভূমি
উল্লেখ্য, জানুয়ারিতে সীমান্তে পাকিস্তান ও ইরানের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটেছিল। পরে কূটনৈতিক আলোচনা ও সৌদি আরব, চীন এবং ওমানের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। এমন একটি সময়ে নতুন করে আবার এই হত্যাকাণ্ড দুই দেশের সম্পর্ককে আরও টানাপড়েনের দিকে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।