

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ও ইউরেনিয়াম মজুত নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় রয়েছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। দেশটির পারমাণবিক কেন্দ্র ফরদোয় মার্কিন হামলার পর ইউরেনিয়াম অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে কি না, তা নিয়েও সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
বৃহস্পতিবার বিমান বাহিনীর প্রধান জেনারেল ড্যান কেইনের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ইরানের ইউরেনিয়াম স্থানান্তরের বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে নিশ্চিত কোনো তথ্য নেই। ইউরেনিয়াম সরানো হয়েছে, না কি আগের অবস্থানেই ছিল—সে বিষয়েও নিশ্চিত হতে পারছি না।”
‘ছায়ায় ঢাকা’ সরবরাহ চক্রের আশঙ্কা
সম্প্রতি ফরদো পারমাণবিক কেন্দ্রে মার্কিন হামলার পর স্যাটেলাইটে কিছু ছবি ধরা পড়ে, যেখানে দেখা যায়—পারমাণবিক স্থাপনার বাইরে অপেক্ষায় বেশ কিছু ট্রাক। ধারণা করা হচ্ছে, সেগুলোতেই ইউরেনিয়াম গোপন কোনো স্থানে স্থানান্তর করা হয়। কিছু সূত্র এমনও দাবি করছে, সরানো ইউরেনিয়ামের পরিমাণ এত বেশি যে, তা দিয়ে একাধিক পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি সম্ভব।
ইরান জানিয়েছে আগেই সরানো হয়েছিল ইউরেনিয়াম
এক ইরানি কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে জানান, “যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই ইরান অস্ত্র-উপযোগী ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম অন্যত্র সরিয়ে নেয়।”
গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস, মতভেদ মার্কিন প্রশাসনে
সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন গোয়েন্দা তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ বলেন, “এ ধরনের তথ্য হামলার সাফল্যকে খাটো করে দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, “সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফের মতে, হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর এমন ক্ষতি হয়েছে, যা কাটিয়ে উঠতে তাদের কয়েক বছর লেগে যাবে।”
অন্যদিকে, নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, হামলায় প্রকৃতপক্ষে ক্ষতির মাত্রা সীমিত ছিল এবং ইরান কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে মাত্র।
উদ্বেগে আন্তর্জাতিক মহল
এ অবস্থায় ইরান প্রকৃতপক্ষে কোথায় ইউরেনিয়াম সরিয়েছে এবং তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা কোথায় দাঁড়িয়ে আছে—তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ পর্যায় থেকে এই ইস্যুতে নতুন গোয়েন্দা অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনাও চলছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
সূত্র: রয়টার্স, নিউইয়র্ক টাইমস