

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরেই গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ক্রমেই জোরালো হয়ে উঠছে। সর্বশেষ, গোলানি ব্রিগেডের ১৫০ জন সদস্য একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করে গাজা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, গাজায় বন্দি ইসরায়েলি নাগরিকদের মুক্তির জন্য অবিলম্বে আলোচনায় বসা উচিত এবং প্রয়োজন হলে যুদ্ধ বন্ধ করে বন্দি বিনিময়ের পথ বেছে নেওয়া যেতে পারে। এর আগে বিমানবাহিনীর এক হাজার রিজার্ভ ও সাবেক সদস্যও একই ধরনের একটি চিঠি দিয়ে গাজা যুদ্ধকে ‘রাজনৈতিক স্বার্থে পরিচালিত গণহত্যা’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
চলমান যুদ্ধের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে এই জনরোষ প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর জন্য বড় চাপ তৈরি করেছে। যদিও তিনি এসব চিঠিকে ‘বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত ষড়যন্ত্র’ বলে আখ্যা দিয়ে আন্দোলনকারীদের দমন করছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান ইয়াল জামির ইতোমধ্যে চিঠিতে স্বাক্ষর করা কিছু রিজার্ভ সেনাকে বরখাস্তও করেছেন। তবুও, এই বিদ্রোহ থেমে নেই।
প্রতিবাদে শুধু সেনাবাহিনী নয়, অংশ নিচ্ছেন সমাজের নানা স্তরের মানুষ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ বারাক, মোসাদ ও শিন বেতের সাবেক সদস্য, উচ্চ প্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা, চিকিৎসক, শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যুদ্ধ বিরোধী অবস্থান নিচ্ছেন। তাদের মতে, গাজায় ইসরায়েলি সেনা অভিযানের মাধ্যমে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়া হচ্ছে, অথচ বন্দি নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার বাস্তব প্রচেষ্টা নেই।
এই পরিস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইসরায়েলের ভেতরেই যুদ্ধবিরোধী একটি শক্তিশালী গণপ্রবাহ গড়ে উঠেছে। নেতানিয়াহুর যুদ্ধকেন্দ্রিক নেতৃত্ব এখন শুধু আন্তর্জাতিকভাবে নয়, নিজ দেশের ভিতর থেকেও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এই চাপ কেবল সাময়িক ক্ষোভ নয়, বরং ভবিষ্যতে ইসরায়েলের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের পূর্বাভাসও দিতে পারে।