

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রের গোপনাঙ্গে আঘাত ও চাকু দিয়ে কাটার হুমকির অভিযোগে দুই সহকারী শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি ভাইরাল হলে বিষয়টি সাংবাদিকদের নজরে আসে।
অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকা হলেন সদর উপজেলার ১০৪ নম্বর মাদ্রাসা সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমাইয়া বিনতে হায়দার ও সারিনা খানম (কিছু সূত্রে তার নাম সাবরিনা খানম)।
ভুক্তভোগী ছাত্র তাওসিয়াদের মা সুমি বেগম গত ২৬ মে ২০২৫ গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, তার শিশুকে বিদ্যালয়ে আটকে রেখে গোপনাঙ্গে আঘাত করা হয়েছে এবং তাকে চাকু দিয়ে কাটার ভয় দেখানো হয়।
ইউএনও অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরদিন ২৭ মে সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পলাশ সরদার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারে প্রতিবেদন পাঠানো হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোছা: জ্যোৎস্না খাতুন ২৩ জুন অভিযুক্ত দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) ধারায় “অসদাচরণ” অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেন। নোটিশে বলা হয়, কেন তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অন্য শাস্তি দেওয়া হবে না, তা ১০ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে হবে। নির্ধারিত সময়ে জবাব না পেলে একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে বলেও সতর্ক করা হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জানান, অভিযুক্ত শিক্ষিকারা ইতোমধ্যে লিখিত জবাব দাখিল করেছেন। তবে তাদের ব্যক্তিগত মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় শহরের কিছু মহল প্রতিবেদনটি গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার অনুরোধ জানালেও সচেতন অভিভাবক ও মানবাধিকার কর্মীরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছেন। শিশুদের ওপর এমন বর্বর আচরণে স্থানীয় জনগণ ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।