গোপালগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান, অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে

print news
img

গোপালগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয়ে সেবা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (৭ মে) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত পরিচালিত এই অভিযানে বিআরটিএ কার্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

দুদকের গোপালগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মোঃ মশিউর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে অংশ নেন সহকারী পরিচালক বিজন কুমার রায়, কর্মকর্তা সোহেলসহ অন্যান্যরা।

দুদক কর্মকর্তারা জানান, সারাদেশের ৩৬ জেলায় একযোগে পরিচালিত অভিযানের অংশ হিসেবেই গোপালগঞ্জের এই অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে ঘুষ লেনদেন, গ্রাহকদের হয়রানি, তথ্য গোপন, দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থাকা, অবৈধ সম্পদ অর্জন, দালাল চক্রের সক্রিয়তা ইত্যাদি নানা অনিয়মের প্রমাণ মেলে।

দুদকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত গোপালগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয়ে মোট ২ হাজার ৮৮৪টি ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৬৭টি আবেদন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে এবং ৪৭টি আবেদন বাতিল করে ফেরত দেওয়া হয়েছে। যাচাইয়ে দেখা গেছে, পত্র ইস্যু রেজিস্ট্রারে বিপুল অনিয়ম রয়েছে। অসংখ্য রেজিস্ট্রেশন নম্বর ফাঁকা রাখা হয়েছে যা ভবিষ্যতে দুর্নীতির আশঙ্কা সৃষ্টি করছে।

এছাড়া, অফিস সহকারী লিখন শেখের বিরুদ্ধে রয়েছে অস্বাভাবিক সম্পদের অভিযোগ। জানা যায়, তিনি খুলনায় বসবাস করেন এবং প্রতিদিন সেখান থেকে যাতায়াত করেন। তার নামে খুলনায় বাড়ি, নড়াইলে জমি ও যানবাহনের তথ্য মিলেছে, যা তার সরকারি বেতনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। অফিস সহায়ক ইয়াসিন শেখের বিরুদ্ধেও আগের দুদক গণশুনানীতে অভিযোগ ওঠে, যার ভিত্তিতে বদলির সুপারিশ করা হলেও তা কার্যকর হয়নি।

উল্লেখযোগ্যভাবে, গোপালগঞ্জ বিআরটিএ কার্যালয়ে সহকারী পরিচালকের পদে বরগুনা জেলার এক কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন, যিনি সপ্তাহে মাত্র একদিন অফিস করেন। এতে সেবা গ্রহণে চরম দুর্ভোগে পড়ছে সাধারণ জনগণ। তার অনুপস্থিতির সুযোগে দালালচক্র ও অফিস কর্মীদের মধ্যে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট।

দুদক কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন,

“অভিযানে আমরা একাধিক অনিয়মের সত্যতা পেয়েছি। এসব বিষয়ে আমরা বিআরটিএর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করবো এবং দালালচক্র নির্মূলসহ জনগণের জন্য সেবা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাবো।”

তিনি আরও জানান, তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সুপারিশ প্রেরণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *