চার দফা দাবিতে হেফাজতের মহাসমাবেশ আজ, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের আহ্বান

print news
img

নারী অধিকার সংস্কার কমিশন বাতিল, শাপলা চত্বরসহ আওয়ামী আমলের সব গণহত্যার বিচার এবং সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা পুনর্বহালের দাবিতে আজ (শনিবার, ৩ মে) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করছে হেফাজতে ইসলাম। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১টা পর্যন্ত চলবে এই কর্মসূচি। সমাবেশস্থলে তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ, ভোর থেকেই নেতাকর্মীদের ঢল নামে সেখানে।

সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকার বাইরের অংশগ্রহণকারীদের জন্য তিনটি নির্ধারিত পয়েন্ট থেকে উদ্যানে প্রবেশের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হেফাজত নেতারা জানিয়েছেন, সুশৃঙ্খলভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ কর্মসূচিকে সফল করার লক্ষ্যে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজধানীর বাইতুল মোকাররমসহ বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরেই গণসংযোগ ও বিক্ষোভ করেছে হেফাজত।

এদিকে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। হেফাজতের নেতারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, এই সমাবেশ সরকারের কাছে জনগণের দাবি পৌঁছে দেবে।

গতকাল শুক্রবার সংগঠনের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, কথিত নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ কোরআনবিরোধী ও ইসলামবিরোধী। এতে পতিতাবৃত্তিকে ‘শ্রম’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব নারীকে পণ্য বানানোর অপচেষ্টা।

মহাসমাবেশ সম্পর্কে যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, এই কমিশনের মূল উদ্দেশ্য দেশের ইসলামি ও পারিবারিক সমাজব্যবস্থা ধ্বংস করে পাশ্চাত্যধর্মী সমাজ চাপিয়ে দেওয়া। তিনি বলেন, ‘‘এই কমিশন LGBTQ সংস্কৃতির বৈধতা তৈরির পথ খুলে দিতে চায়, যা সম্পূর্ণরূপে ইসলামবিরোধী।’’

চার দফা দাবিতে আয়োজিত এই সমাবেশের অন্য দাবিগুলো হলো:
১. কথিত নারী অধিকার সংস্কার কমিশন বাতিল,
২. সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনর্বহাল,
৩. আওয়ামী আমলে করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার,
৪. শাপলা ট্র্যাজেডিসহ সব গণহত্যার বিচার এবং ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলিম নিপীড়নের প্রতিবাদ।

হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আজিজুল হক জানিয়েছেন, অন্তত পাঁচ হাজার বাসে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মীরা সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমরা প্রস্তুত, ইনশাআল্লাহ সমাবেশ সফল হবে।”

অন্যদিকে, হেফাজতের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, দাবি মানা না হলে ঢাকা অচল করে দেওয়া হবে।

সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, দেশজুড়ে মাদরাসা ও তৃণমূল পর্যায়ে প্রস্তুতিসভা, গণসংযোগ ও প্রচারণার মাধ্যমে লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণে এই মহাসমাবেশ ঐতিহাসিক রূপ নিতে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *