চোরাই তার ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বেই সোহাগ হত্যা, নয়জন গ্রেফতার: ডিএমপি

print news
img

রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে পরিচিত ভাঙারি ব্যবসায়ী লালচাঁন ওরফে সোহাগকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে হত্যা করে চোরাই পল্লি বিদ্যুৎ তার কেনা-বেচা নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িত প্রতিপক্ষ। বুধবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, নিহত সোহাগ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে পল্লি বিদ্যুৎ লাইনের চোরাই তারের ব্যবসা করতেন। সাবেক সাংসদ হাজী সেলিমের ভাগনে পিল্লু কমিশনারের ছত্রছায়ায় ব্যবসাটি শুরু করলেও সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক অবস্থান পাল্টে ফেলেন। এ সময় অন্য একটি গ্রুপ ওই ব্যবসায় যুক্ত হয়, যার ফলে দ্বন্দ্ব ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়। এই দ্বন্দ্বই সোহাগ হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তা।

হত্যার ঘটনায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, “এটা নির্বাচনকে প্রভাবিত করার উদ্দেশ্যে নয়, সম্পূর্ণ ব্যবসায়িক ও ব্যক্তিগত কোন্দল থেকে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে।”

গত ৯ জুলাই বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের গেটের সামনে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত একদল দুর্বৃত্ত সোহাগকে প্রকাশ্যে হত্যা করে। ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে চকবাজার থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং তাৎক্ষণিকভাবে সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেফতার করে।

পরবর্তীতে সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সহযোগিতায় আরও সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের মধ্যে পাথর নিক্ষেপকারী রেজওয়ান উদ্দিন অভিকে ১৫ জুলাই পটুয়াখালী থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের ভাষ্যমতে, সে একজন ধর্মান্তরিত মুসলিম এবং এই ঘটনার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত।

ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, এজাহার নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। নিহত সোহাগের সাবেক স্ত্রী, সৎ ভাই ও বড় বোন থানায় পৃথকভাবে এজাহার দায়েরের চেষ্টা করেন। পরে বড় বোন মঞ্জু আরা ১৯ জনের বিরুদ্ধে এজাহার দাখিল করেন। প্রথম খসড়া থেকে পাঁচজন বাদ দিয়ে একজন নতুনকে যুক্ত করা হয়।

ডিএমপি জানায়, এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ফারুক আহমেদ, লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জসিম উদ্দিন ও মিডিয়া বিভাগের ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *