আবাসন সংকট, বাজেট অনুমোদন ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বাস্তবায়নের দাবিতে রাজপথে নেমেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারীরা তিন দফা দাবির ভিত্তিতে ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের বাধা ও হামলার মুখে পড়ে। এতে আহত হয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ অন্তত ৫০ জন।

আন্দোলনের তিন দফা দাবি:

১. আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জবির ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করতে হবে।
২. প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে তা অবিলম্বে অনুমোদন করতে হবে।
৩. দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

লংমার্চ ও পুলিশের হামলা:

বুধবার দুপুরে জবি ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের উদ্দেশ্যে লংমার্চ শুরু করেন। গুলিস্তান, মৎস্য ভবন ও কাকরাইলে একাধিকবার পুলিশ বাধা দেয়। কাকরাইল মসজিদ এলাকায় পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও গরম পানি ছুঁড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। এতে অন্তত ৩৮ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন—জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের শিক্ষার্থীরা ও বহু শিক্ষার্থী।

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন, ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।

তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললেও তাকে উদ্দেশ করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেওয়া হয় এবং একজন তরুণ বোতল ছুঁড়ে মারেন বলে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে। উপদেষ্টা এই ঘটনাকে আন্দোলনে বহিরাগতদের ‘স্যাবোটাজ’ বলেও দাবি করেন।

আন্দোলনের ভবিষ্যৎ:

জবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, “দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। সরকারকেই এই দায় নিতে হবে।”
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, “শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বিতর্কিত করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলা ও উসকানি দেওয়া হয়েছে।”

বিভিন্ন সংগঠনের সংহতি:

আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উচ্চশিক্ষার নামে প্রতারণা করা হচ্ছে। অধিকার আদায়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।”