জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি মেনে নিতে গড়িমসি কেন—প্রশ্ন এনসিপি নেতার

print news
image 203

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের দ্বিতীয় দিনেও উত্তাল কাকরাইল মোড়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম ‘শাটডাউন’ ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা।

এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের দাবিকে “সম্পূর্ণ যৌক্তিক” আখ্যা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি প্রশ্ন তোলেন—“জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিতে এত গড়িমসি কেন?”

সারজিস আলম লিখেছেন, “ঢাকার মতো একটি ঘনবসতিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল শহরে আবাসনহীন হাজার হাজার শিক্ষার্থী কীভাবে টিকে আছে, সেটিই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে থাকা সরকারি জমি বা ভবন এতদিন রাজনৈতিক দখলে থাকলেও, নতুন সরকারের আমলে তা এখনও কেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি?”

তিনি আরও বলেন, “যেখানে সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় বানানোর হিড়িক, সেখানে রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে থাকা একটি প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী অবকাঠামো এখনো কেন অগ্রাধিকারে নেই? দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ কেন একনেকে অনুমোদন পাচ্ছে না?”

সারজিস আলম মনে করেন, “এই শিক্ষার্থীরাই দেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পথে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু তাদের জন্য নীতিগত কোনো সংস্কার চোখে পড়ছে না। এটি হতাশাজনক।”

এদিকে বুধবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে শিক্ষার্থীদের লংমার্চ চলাকালে পুলিশ টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি:

১. আবাসন বৃত্তি: ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে জবির ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা চালু করতে হবে।
২. পূর্ণাঙ্গ বাজেট: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন দিতে হবে।
৩. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস: পরবর্তী একনেক সভায় জবির দ্বিতীয় ক্যাম্পাস অনুমোদন দিয়ে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকা শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, আর্থিক বরাদ্দে বৈষম্য এবং আবাসন সংকট দীর্ঘদিনের সমস্যা। শিক্ষার্থীদের এই দাবিগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে শুধু সমস্যা সমাধান নয়, বরং শিক্ষা-অধিকার নিশ্চিতের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *