জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় তরুণদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান

print news
img

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তরুণদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, “তরুণদের উচিত লোভ, ক্ষমতার মোহ, দুর্নীতি ও অনিয়ম থেকে দূরে থেকে দেশের পরিবেশ রক্ষায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখা।”

শনিবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ‘Manifesto Talk: Youth, Environment and Climate’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ‘ইয়ুথ ক্লাইমেট কোয়ালিশন’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন, যা তরুণ জলবায়ু আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম।

বায়ুদূষণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা জানান, সরকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে পুরনো বাস সরিয়ে নেওয়া, বৈদ্যুতিক যানবাহন চালু এবং ঢাকার চারপাশে নতুন ইটভাটা স্থাপনে নিষেধাজ্ঞাসহ তিনটি বড় উদ্যোগ নিয়েছে। উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “উন্নয়ন প্রয়োজন, কিন্তু তা প্রকৃতিকে ধ্বংস করে নয়। জলাশয় ভরাট, পাহাড় কাটা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অবহেলার মাধ্যমে উন্নয়ন দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর হতে পারে।”

পলিথিন ও প্লাস্টিক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “পরিবেশ রক্ষায় নাগরিকদের দায়িত্বও গুরুত্বপূর্ণ। বাজারে গেলে পাট বা কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করুন। প্লাস্টিক ব্যবহার সীমিত করতে হবে, এবং সিঙ্গল-ইউজ প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করতে হবে।”

বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তিনি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তিনটি মডেল প্রকল্প গ্রহণের প্রস্তাব দেন। আমিনবাজার ও মাতুয়াইলের ময়লার স্তুপে আগুন লাগা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি বলেও তিনি সতর্ক করেন। এসব এলাকা থেকে নির্গত ধোঁয়ার কারণে স্থানীয়দের ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, “রাস্তা সম্প্রসারণের নামে পুরনো গাছ কাটা উচিত নয়। বন বিভাগ ও গণপূর্ত অধিদপ্তর মিলে ঢাকার একটি জাদুঘরের নকশা পরিবর্তন করে গাছ রক্ষা করছে—এটাই ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।” তিনি জানান, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি গাছ নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং পরিবেশবান্ধব গাছ রোপণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জিয়াউল হক, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এবং স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদারসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বক্তব্য রাখেন। এতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত ৩০০’র বেশি তরুণ জলবায়ুকর্মী অংশগ্রহণ করেন।

এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে পরিবেশ ও জলবায়ু ইস্যুতে নিজেদের দলের অবস্থান তুলে ধরেন এবং প্রতিশ্রুতি দেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহারে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *