

চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ‘জুলাই যোদ্ধারা’ আগামী মাস (জুলাই) থেকেই মাসিক ভাতা পাবেন বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। পাশাপাশি এই যোদ্ধারা আজীবন বিনামূল্যে সরকারি মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা পাবেন এবং পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সরকার বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সোমবার সচিবালয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব তথ্য জানান।
উপদেষ্টা জানান, মাত্র সাত-আট মাসে আহত ও শহীদদের চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে, যেখানে ৮৩৪ জন শহীদের নাম গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। প্রত্যেক শহীদ পরিবারের জন্য এককালীন ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যার মধ্যে ১০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে এবং বাকি ২০ লাখ আগামী জুলাইয়ে দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে পরিবারগুলো প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা পাবে এবং কর্মক্ষম সদস্যদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকরি দেওয়া হবে।
আহত যোদ্ধাদের তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে মাসিক ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা নির্ধারণ করা হয়েছে:
- ক্যাটাগরি A: যারা গুরুতর আহত (যেমন দুই চোখ অন্ধ, অঙ্গহানি) এবং অন্যের সহায়তা ছাড়া চলতে পারেন না—এ রকম ৪৯৩ জন যোদ্ধা ৫ লাখ টাকা এককালীন অনুদান ও প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা পাবেন। তারা বিদেশি চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের সুযোগও পাবেন।
- ক্যাটাগরি B: যারা আংশিক অক্ষমতা নিয়ে চলাফেরা করতে সক্ষম—এমন ৯০৮ জন যোদ্ধা ৩ লাখ টাকা এককালীন অনুদান ও ১৫ হাজার টাকা মাসিক ভাতা পাবেন।
- ক্যাটাগরি C: চিকিৎসার পর সম্পূর্ণ সুস্থ—১০ হাজার ৬৪২ জনকে এককালীন ১ লাখ টাকা ও ১০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা দেওয়া হবে।
উপদেষ্টা জানান, জুলাই যোদ্ধাদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য একটি নতুন অধিদপ্তর গঠিত হয়েছে, যেখানে ২০ জন কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়ে কাজ করছেন একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে।
এছাড়া, ৫ আগস্টকে “জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস” হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শহীদ পরিবারের মধ্যে ১৩৪ জনের ক্ষেত্রে ওয়ারিশ জটিলতার কারণে বিলম্ব হলেও দ্রুত সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন উপদেষ্টা।
ফারুক-ই-আজম বলেন, “জুলাই যোদ্ধারা গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার ইতিহাসের অঙ্গ। বাংলাদেশ রাষ্ট্র তাদের ত্যাগের মর্যাদা দিতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাবে।”