

টেকসই রাজস্ব সংস্কার ও “রাজস্ব অধ্যাদেশ” বাতিলের দাবিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং কাস্টমস‑ভ্যাট‑ট্যাক্স দফতরের কর্মকর্তা‑কর্মচারীরা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো কলমবিরতি পালন করেছেন। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলা এই কর্মসূচিতে মূল দফতরসহ দেশের সব শুল্ক ভবন, কাস্টম হাউস ও কর অফিসে কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে।
কলমবিরতি চললেও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, রপ্তানি কার্যক্রম ও জাতীয় বাজেট প্রণয়নের কাজ কর্মসূচির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।
কোথায় কী অবস্থা
- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে অ্যাসেসমেন্ট সম্পূর্ণ বন্ধ।
- কমলাপুর আইসিটি‑তে কন্টেইনার ছাড়পত্র ও মূল্যনির্ধারণ আটকে আছে।
- আঞ্চলিক ভ্যাট ও কর সার্কেলগুলোতেও একই অবস্থা; কর্মকর্তা‑কর্মচারীরা উপস্থিত হলেও ফাইল নড়েনি।
১৭ মে আবার কলমবিরতি
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, ১৭ মে একই সময়সূচিতে (সকাল ১০টা‑বিকেল ৩টা) তৃতীয় দিনের কলমবিরতি হবে। দাবি পূরণে অগ্রগতি না হলে সেদিনই নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
পদত্যাগে চাপ
কর্মসুচির মধ্যেই বিসিএস (ট্যাক্সেশন) অ্যাসোসিয়েশন ও বিসিএস কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনের সহ‑সভাপতি, মহাসচিব, কোষাধ্যক্ষসহ ৩০‑এর বেশি শীর্ষ নেতা পদত্যাগ করেছেন। অভিযোগ—“কয়েকজন শীর্ষ নেতা এনবিআরপন্থী সংস্কারের পক্ষে কাজ করছিলেন”, যা কর্মকর্তা‑কর্মচারীদের স্বার্থের পরিপন্থী।
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য
“এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ” বলে, সরকার যে রাজস্ব‑অধ্যাদেশ জারি করেছে তা সহজে ও দ্রুত রাজস্ব বাড়াবে না, বরং কাস্টমস‑কর ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা ডেকে আনবে। হাজার হাজার মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তার মতামত না নিয়েই খসড়া তৈরি করা হয়েছে—এটাই কলমবিরতির মূল কারণ।
এক বিবৃতিতে ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে—“করদাতা ও সেবাপ্রার্থীদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত। তবে দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর, অংশগ্রহণমূলক ও সমন্বিত সংস্কার ছাড়া রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।”
প্রেক্ষাপট
১৩ মে এনবিআর সদর দফতরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি থেকে এই কলমবিরতির ডাক দেওয়া হয়। প্রথম দিন (১৪ মে) সকাল ১০টা‑দুপুর ১টা পর্যন্ত সীমিত কলমবিরতি হয়; দ্বিতীয় দিনেই সময়সীমা বাড়িয়ে পূর্ণদিবসের কাছাকাছি করা হয়েছে।