

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী সাম্যর মৃত্যুর ঘটনায় প্রশাসনের ঘোষিত অর্ধদিবস শোক প্রত্যাখ্যান করে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দিনভর ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ধর্মঘট পালন করছে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ। ‘সন্ত্রাসবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল ও বাম ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মূল দাবি তিনটি:
১. উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ
২. নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতকরণ
৩. সাম্য হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি
তালা দিয়ে বন্ধ একাডেমিক ভবন
সকাল থেকেই কলা ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদসহ বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। বিজ্ঞান অনুষদ ও প্রশাসনিক ভবনেও তালা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে জানা গেছে। কোনো ক্লাস বা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক কাজ থেকেও বিরত ছিলেন।
বিকেলে সমাবেশ
দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল ৫টায় অপরাজেয় বাংলা’র পাদদেশে উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ডেকেছে শিক্ষার্থীরা।
জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও মাস্টার দা সূর্য সেন হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক আবিদ উর রহমান মিশু বলেন,
“আমাদের দাবি খুবই স্পষ্ট—উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ এবং নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে হবে। সাম্যর হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
প্রেক্ষাপট
ঢাবির শিক্ষার্থী সাম্যর আকস্মিক মৃত্যু এবং তা ঘিরে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও ‘সাংগঠনিক সন্ত্রাস’ প্রসঙ্গে ছাত্রসমাজের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেক শিক্ষার্থী মনে করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবরই পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে এবং ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
এই আন্দোলন শুধুমাত্র সাম্যর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নয়; এটি দীর্ঘদিনের অন্যায়, দমন-পীড়ন ও ছাত্রনিরাপত্তাহীনতার বিরুদ্ধে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ–এর বহিঃপ্রকাশ।
এবং, এটিও স্পষ্ট যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুশাসন ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা না হলে এ ধরনের আন্দোলন চলতেই থাকবে।