

নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বোর্নো প্রদেশের মাইদুগুরি শহরে ভয়াবহ গাড়িবোমা হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও অনেকে। রোববার (স্থানীয় সময়) এই প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটে, যা এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী এবং ভিডিও ফুটেজ সূত্রে জানা গেছে, দুটি যাত্রীবাহী বাস বোর্নোর রান শহর থেকে গামবোরু এনগালা শহরের দিকে যাচ্ছিল। পথে মাইদুগুরিতে পৌঁছানোর পরপরই দুই বাসেই বিস্ফোরণ ঘটে। নিহতদের অধিকাংশই বাসের যাত্রী ছিলেন।
নাইজেরিয়া পুলিশ এখনো এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বাসগুলোতে আগে থেকেই শক্তিশালী ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বসানো ছিল। এই ধরনের বিস্ফোরক সাধারণত বোকো হারাম ব্যবহার করে থাকে বলে জানান তিনি।
ঘটনার দায় এখনো কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। তবে বোর্নো প্রদেশ দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বোকো হারামের কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় সন্দেহের তীর সেদিকেই। এই গোষ্ঠী বহুদিন ধরেই নাইজেরিয়ায় সহিংসতা, অপহরণ ও আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে আসছে এবং মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আল কায়দা নেটওয়ার্কের প্রতি তাদের আনুগত্য রয়েছে।
এই মর্মান্তিক হামলায় নিখোঁজদের সন্ধানে স্বজনেরা হাসপাতাল ও মর্গে ভিড় করছেন। বাস দুটোর এক যাত্রীর ছেলে আবা আমা মুহম্মদ রয়টার্সকে জানান, তিনি তাঁর মাকে খুঁজতে এসেছিলেন, কিন্তু মরদেহগুলোর অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে শনাক্ত করাও সম্ভব হয়নি। “মরদেহগুলোর প্রায় সবই ছিন্নভিন্ন হয়ে আছে… আমি আমার মা-কে শনাক্ত করতে পারিনি,” বলেন মুহম্মদ।
হামলার ঘটনার পর প্রদেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, বোকো হারামের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা নাইজেরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।