

নারী সংস্কার কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবনাকে “চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ” বলে মন্তব্য করেছেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) নিউজ টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মামুনুল হক বলেন, “নারী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনার আদ্যোপান্ত আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি এবং একে পুরোপুরি প্রত্যাখ্যানযোগ্য বলে মনে করি। এটি ইসলামের শাশ্বত বিধানের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক, এমনকি কোরআনের মৌলিক ব্যাখ্যার বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছে।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “এই প্রস্তাবনার মাধ্যমে দেশের প্রাচীন পারিবারিক ও সামাজিক কাঠামোকে ভেঙে দিয়ে পাশ্চাত্য অনুকরণে একটি বিকৃত সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। প্রস্তাবনায় সমকামিতার বৈধতা, যৌনকর্মে উসকানি এবং প্রতিতাবৃত্তিকে বৈধতা দেওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে—যা গভীর উদ্বেগের বিষয়।”
নারী-পুরুষের সম্পত্তির সমানাধিকারের প্রসঙ্গে মামুনুল বলেন, “উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিধান শুধু সম্পদের ভাগ নয়; এটি দায়িত্ব, ভরণ-পোষণের বাধ্যবাধকতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইসলামিক শরিয়তে নারী ও পুরুষের সম্পত্তির ভাগ পৃথক কারণেই নির্ধারিত—সে অনুযায়ীই সম্পদ বণ্টন হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিবাহ ও তালাক একটি ধর্মীয় বিধান, যেখানে অভিন্ন নাগরিক আইন চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এটি ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ। বিশেষ করে ইসলামে বিবাহ, তালাক ও উত্তরাধিকারের নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে, যেগুলো আল্লাহ প্রদত্ত। কোনো রাষ্ট্র বা কমিশনের এখতিয়ার নেই এগুলো পরিবর্তন করার।”
নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়ে মামুনুল হক বলেন, “এই প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে দেশের সব ইসলামপন্থী সংগঠন এক কণ্ঠে প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমরা এই কমিশন বিলুপ্ত এবং প্রস্তাবনা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।”
তিনি আরও জানান, “এই দাবিসহ মোট ৪ দফা দাবিতে আগামী ৩ মে (শনিবার) সকাল ৯টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে এক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে দেশের সব ইসলামপন্থী সংগঠন একত্রিত হয়ে অংশ নেবে।”