

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের নয় মাস পূর্ণ হলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখনও নির্দিষ্ট কোনো তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন আয়োজনের সময়সূচি নির্ধারণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন জানান, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া দেশের অর্থনীতিতে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “নির্বাচনের তারিখ এখনো ঘোষিত হয়নি। তবে এখন সময় এসেছে একটি নির্দিষ্ট দিন ঘোষণা করার। ডিসেম্বর হোক কিংবা জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি বা মার্চ—যে মাসেই হোক না কেন, এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দূর করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা বিনিয়োগের পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করে। এর প্রভাবে কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়, প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয় এবং দারিদ্র ও বৈষম্য বৃদ্ধি পায়। এই পরিস্থিতি অর্থনীতিকে একটি দুষ্টচক্রে ফেলে দেয়, যা থেকে উত্তরণ সহজ নয়।
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “সরকার ব্যবসায়ী সম্মেলন করে সমস্যাগুলো শোনে ঠিকই, কিন্তু বিনিয়োগ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। যতদিন না নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, ততদিন এই অনিশ্চয়তা দূর হবে না।”
তবে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন হলেই সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে—এমনটা ধরে নেওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, “গ্যাস সংকটসহ কাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যা আছে যা বিনিয়োগের পথে প্রধান বাধা। ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো চালু, বাপেক্সকে শক্তিশালীকরণ, ও লজিস্টিক নীতি বাস্তবায়নের মতো পদক্ষেপগুলো এখনই নেওয়া দরকার। এগুলোতে বিলম্ব হলে নির্বাচন পরবর্তী সময়েও সংকট থেকেই যাবে।”
কালো টাকা সাদা করার বিষয়ে বাজেটে কোনো প্রস্তাব থাকলে তা রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত এবং অর্থনৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
সিপিডির পক্ষ থেকে বলা হয়, সরকার এর আগে ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচনের সম্ভাবনার কথা বললেও তা আরও স্পষ্ট করে নির্ধারণের সময় এসেছে। কারণ, বিনিয়োগকারীরা অনিশ্চয়তা অপছন্দ করেন—তারা স্থিতিশীল ও পূর্বানুমেয় পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।