

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, “শেষ পর্যন্ত গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণরূপে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং হামাস পরাজিত হবে।” বুধবার (২১ মে) টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
নেতানিয়াহু বলেন, “আমাদের একটি স্পষ্ট ও ন্যায্য লক্ষ্য রয়েছে—হামাসকে পরাজিত করা এবং গাজা থেকে নিরাপত্তা হুমকি নির্মূল করা। আমাদের কাজ এখনো শেষ হয়নি এবং আমরা শেষ পর্যন্ত এটি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
নিজের ভাষণে নেতানিয়াহু গাজার ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের বিষয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, ইসরায়েল সাহায্য প্রবেশে বাধা দিচ্ছে না এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে তিন-পর্যায়ের একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে:
- গাজায় মৌলিক সাহায্য সামগ্রী পৌঁছানো।
- মার্কিন কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় খাদ্য বিতরণ কেন্দ্র চালু।
- যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে গাজার নিরাপত্তা ইসরায়েলের হাতে রেখে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষায় একটি বিশেষ অঞ্চল গঠন।
নেতানিয়াহু বলেন, গাজায় কমপক্ষে ২০ জন ইসরায়েলি জিম্মি “অবশ্যই জীবিত” আছেন। তিনি জানান, জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এলে তা বিবেচনায় নেওয়া হবে। তবে তিনি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি বা হামাসকে রেহাই দেওয়ার সম্ভাবনা সরাসরি নাকচ করেন।
গাজার সামরিক অভিযানে আন্তর্জাতিক মহল থেকে যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশে চাপ সত্ত্বেও, নেতানিয়াহু বলেন, “আমরা আমাদের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো আপস করব না। ইসরায়েল নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই নির্ধারণ করবে।”
ইসরায়েলি বাহিনী রাফাহসহ গাজার বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযানের মুখে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং জাতিসংঘ মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা জানিয়ে সতর্কতা দিচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে নেতানিয়াহুর “গাজা পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকবে” বক্তব্য নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, এনডিটিভি (২০২৫, মে ২১)