প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যা: দুই তরুণীকে খুঁজে বের করার নির্দেশ আদালতের

print news
img

রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই তরুণীকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্যাহ এই নির্দেশ দেন।

ঘটনার পর গ্রেপ্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বনানী থানার যুগ্ম সদস্য সচিব হৃদয় মিয়াজীকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “ঘটনার ভিডিও ফুটেজে হৃদয় মিয়াজীর সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা অন্য কোনো মোটিভ আছে কি না, তা জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।”

অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী তাসলিমা মিনু বলেন, “হৃদয়ের সঙ্গে ভুক্তভোগীর কোনো যোগাযোগ ছিল না। তিনি অন্য বিভাগে পড়েন এবং অভিযুক্ত মেয়েদের চিনতেনও না। রাজনৈতিকভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।”

শুনানিতে বিচারক তদন্ত কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করেন, “মেয়েরা কোথায়? তাদের এখনো ধরা হয়নি কেন?” জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, সিসিটিভি ফুটেজে তাদের দেখা যায়নি এবং সন্দেহ করার মতো পর্যাপ্ত তথ্য মেলেনি। তিনি জানান, ঘটনার মূল সংগঠক আবু জর পিয়াস নামে এক যুবককে খোঁজা হচ্ছে।

তবে বিচারক নির্দেশ দেন, “মেয়েরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল, তাদের ভূমিকা ছিল। তাদের অবশ্যই খুঁজে বের করতে হবে।”

ঘটনার পেছনের বিবরণ

গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে বনানীতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পাশে বন্ধুদের সঙ্গে সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন পারভেজ। এ সময় সদ্য ভর্তি হওয়া ইংরেজি এবং হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীও সেখানে ছিলেন। অভিযোগ ওঠে, পারভেজ নাকি ওই দুই তরুণীকে উত্ত্যক্ত করেছেন। তারা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করলে পারভেজকে ডেকে নেওয়া হয়।

প্রক্টরের কাছে পারভেজ জানান, তিনি কেবল বন্ধুদের সঙ্গে হাসছিলেন এবং কাউকে বিরক্ত করেননি। তবুও ক্ষমা চাইতে বলা হলে, তিনি তা করেন। এরপর প্রক্টর অফিসের বাইরে পারভেজকে ঘিরে ফেলে কয়েকজন ছাত্র এবং বহিরাগত ব্যক্তি। সেখানেই ছুরিকাঘাতে নিহত হন তিনি।

তাকে দ্রুত কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মামলার অগ্রগতি

নিহতের মামাত ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়। যাদের মধ্যে রয়েছেন- মেহেরাজ ইসলাম, আবু জর গিফারী পিয়াস, মাহাথির হাসান, সোবহান নিয়াজ তুষার, হৃদয় মিয়াজী, রিফাত, আলী ও ফাহিম।

র‍্যাব গত ২১ এপ্রিল কুমিল্লার তিতাস থেকে হৃদয় মিয়াজীকে গ্রেপ্তার করে। এর আগের দিন ঢাকার মহাখালী থেকে আরও তিনজনকে আটক করে পুলিশ, যাদের নাম এজাহারে ছিল না তবে সিসিটিভি ফুটেজে উপস্থিতি দেখা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *