

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে বরখাস্ত করেছে দেশটির সাংবিধানিক আদালত। কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে তার একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ঘটনায় সৃষ্ট বিতর্কের জেরে মঙ্গলবার আদালত এ রায় দেন।
আদালত জানায়, ৭-২ ভোটে পেতংতার্নকে পদচ্যুত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তবে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের জন্য দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী সুরিয়া জুংরুংরুয়াংকিত ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
বিতর্কের সূচনা
গত মে মাসে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সীমান্তে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে উত্তেজনাকর সংঘর্ষ হয়। এর কিছুদিন পর ফাঁস হয় থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন ও হুন সেনের একটি ফোনালাপ।
ফাঁস হওয়া ওই ক্লিপে পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের এক সামরিক কর্মকর্তার সমালোচনা করেন এবং হুন সেনকে ‘আংকেল’ (চাচা) বলে সম্বোধন করে তাঁর প্রতি নমনীয় মনোভাব প্রকাশ করেন। এই আচরণ জনগণের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ ও সন্দেহ তৈরি করে। পরে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং তার পদত্যাগের দাবিতে সাংবিধানিক আদালতে আবেদন জমা দেওয়া হয়।
সেনাবাহিনী ও রাজনীতি
থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনীকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করাকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার একটি বড় কারণ হিসেবে দেখা হয়। দেশটির রাজনৈতিক ইতিহাসে সেনাবাহিনীর প্রভাব সুদূরপ্রসারী এবং প্রায়শই সরকার পতনের পেছনে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
সিনাওয়াত্রা বংশ ও রাজনীতি
পেতংতার্ন হলেন থাইল্যান্ডের প্রভাবশালী সিনাওয়াত্রা পরিবারের তৃতীয় সদস্য যিনি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ক্ষমতা হারালেন। এর আগে তার বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা ও খালা ইংলাক সিনাওয়াত্রাও একই পরিণতির শিকার হন।
সাম্প্রতিক সময়ে এক রক্ষণশীল জোটসঙ্গী জোট ত্যাগ করায় সরকার আরও সংকটে পড়ে। ফলে দুর্বল হয়ে পড়া জোটের উপর এই বরখাস্তের প্রভাব রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিক্রিয়া
ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় এর আগেই দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন পেতংতার্ন। তবে আদালতের রায়ের পর তার পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
সূত্র: বিবিসি