ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরোচিত হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে এবং নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাজধানীতে শোভাযাত্রা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এতে দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা মুসলিমবিশ্বের নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে শান্তিনগর, মৌচাক হয়ে কারওয়ানবাজার পর্যন্ত এই শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শোভাযাত্রায় বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
শোভাযাত্রার সময় ফিলিস্তিনের পতাকা ও কালো ব্যানার বহন করেন অংশগ্রহণকারীরা। তারা ‘ইসরায়েলি পণ্য বয়কট করো’, ‘দুনিয়ার মুসলিম এক হও, লড়াই করো’, ‘ফিলিস্তিনে হামলা কেন, জাতিসংঘ জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত করে তোলেন রাজধানীর রাজপথ।
শোভাযাত্রাপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, “ফিলিস্তিনে যা ঘটছে তা শুধু একটি জাতিকে নিঃশেষ করার চক্রান্ত নয়, এটি বিশ্ব মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। মুসলিমবিশ্ব যদি ঐক্যবদ্ধ হতো, ইহুদিরা এতটা সাহস দেখাতে পারত না।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “ফিলিস্তিনে যুগের পর যুগ ধরে যা চলছে, তা মানবতাবিরোধী অপরাধ। অথচ জাতিসংঘ আজ ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে আছে। দেশের বুদ্ধিজীবীরাও চুপ, অন্তর্বর্তী সরকারও এ নিয়ে এখনো কোনো স্পষ্ট বার্তা দেয়নি।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিশ্বের কিছু পরাশক্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনে বহু আগেই ফিলিস্তিনে গণহত্যা শুরু হয়েছে। আজ ফিলিস্তিনিরা নিজেদের দেশেই পরবাসী। অথচ মুসলিমবিশ্ব ও আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকা চোখে পড়ার মতো নয়।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আওয়ামী লীগ সরকার ইসরায়েল থেকে আড়িপাতার যন্ত্র কিনে বিরোধী দলের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে, যা পরোক্ষভাবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতির শামিল।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “গাজা আজ অবরুদ্ধ খাঁচা। সেখানে নারী-শিশুদের ওপর অমানবিক হামলা চালানো হচ্ছে। এটা থামাতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ প্রয়োজন। একইসঙ্গে যারা বিএনপির কর্মসূচিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করবে, তাদের পুলিশে সোপর্দ করার আহ্বান জানাই।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু এবং সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দীন টুকু।
অন্যান্য নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
দৈনিক নব জাগরণ/Daily Nobo Jagoron
Email : newsnobojagoron@gmail.com
Nobo Jagoron