ভারতের উজানে টানা বর্ষণ ও অতিবৃষ্টির ফলে মুহুরি নদীর পানি দ্রুত বেড়ে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যেই রোববার সন্ধ্যায় ফুলগাজী বাজার এলাকায় পানি ঢুকেছে, প্লাবিত হয়েছে ফেনী-পরশুরাম সড়কের কিছু অংশ। এতে ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল এবং আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
রোববার সন্ধ্যায় পুরাতন পশুর হাট সংলগ্ন স্লুইস গেট দিয়ে মুহুরি নদীর পানি প্রবেশ করলে ফুলগাজী বাজার ও সংলগ্ন সড়ক এলাকায় পানি জমে যায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী রহিম উল্ল্যাহ জানান, “ভারতের উজানে পানির চাপ থাকায় মুহুরি নদীর পানি বেড়ে আমাদের বাজারে ঢুকে পড়েছে। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে আশেপাশের বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।”
স্থানীয় বাসিন্দা মোরশেদ আলম জানান, “গত বছরের ভয়াবহ বন্যার পর মোট ২৫টি বাঁধ শুধু নামমাত্র সংস্কার করা হয়েছে। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পানি হঠাৎ বেড়ে গেছে। ভয় হচ্ছে আবার যেন আগের মতো ক্ষতির মুখে পড়তে না হয়।”
ফুলগাজী বাজারের ব্যবসায়ী বাদশা বলেন, “গত বছরের ক্ষতি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি। দায়সারা সংস্কারের কারণে প্রতিবছরই বাঁধ ভাঙা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে।”
টানা বর্ষণ ও উজানের পানিতে মুহুরি, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে পরশুরামের বিভিন্ন পয়েন্টে অন্তত আটটি স্থানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম জানান, “মুহুরি নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার এক মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আমরা ফুলগাজীতে ২০টি ও পরশুরামে ২১টি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ চিহ্নিত করে সতর্ক প্রস্তুতি নিয়েছি।”
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, “পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে থাকলেও স্লুইস গেট দিয়ে বাজারে ঢুকেছে। আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত আছি।”
গত বছরের জুলাই-আগস্টে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ফেনীর বেশিরভাগ জনপদ পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৯ জন, ক্ষতিগ্রস্ত হয় অবকাঠামো, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ব্যবসা-বাণিজ্য। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল শত কোটি টাকারও বেশি। ১০ লাখের বেশি মানুষ ছিল পানিবন্দি।
দৈনিক নব জাগরণ/Daily Nobo Jagoron
Email : newsnobojagoron@gmail.com
Nobo Jagoron