

বাংলাদেশের প্রযুক্তি জগতে আসছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বিশ্বখ্যাত উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশে। আগামী বুধবার একটি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনে এর উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা বলছেন, স্টারলিংকের মাধ্যমে দেশের শহর থেকে গ্রামীণ জনপদ পর্যন্ত নিরবিচ্ছিন্ন ও উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এর ফলে বিশেষ করে লোডশেডিং-প্রবণ অঞ্চল ও প্রান্তিক এলাকাগুলোতে ইন্টারনেট বিপ্লব ঘটবে।
বিশ্বজুড়ে স্যাটেলাইট-নির্ভর ইন্টারনেট সেবা দিয়ে আলোচিত স্টারলিংক মূলত স্পেসএক্স-এর একটি সহায়ক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে সাবমেরিন ক্যাবলের উপর নির্ভরশীল প্রচলিত ইন্টারনেট ব্যবস্থার তুলনায় স্টারলিংকের সেবা আরও স্থিতিশীল, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা অতিক্রমে সক্ষম।
সূত্র জানায়, স্টারলিংকের সেবা চালুর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বাংলাদেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এসব চুক্তির আওতায় গ্রাউন্ড আর্থ স্টেশন নির্মাণ, অবকাঠামোগত সহায়তা এবং রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। হাইটেক পার্কসহ বিভিন্ন স্থানে এর কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্থানও নির্ধারণ করা হয়েছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “স্টারলিংকের মাধ্যমে দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে উপকূলীয় এলাকা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন হাইস্পিড ইন্টারনেট নিশ্চিত হবে। এর ফলে ডিজিটাল উদ্যোগ, উদ্যোক্তা কার্যক্রম, ফ্রিল্যান্সিং ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য বিশাল সুযোগ তৈরি হবে।”
এ প্রসঙ্গে প্রযুক্তি বিশ্লেষক সুমন আহমেদ সাবির বলেন, “স্টারলিংক কোনো প্রচলিত ইন্টারনেটের বিকল্প নয়, বরং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। যেসব জায়গায় এখনো ইন্টারনেট পৌঁছায়নি, সেখানে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজেই সংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।”
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, “স্টারলিংকের আগমনে বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়বে। বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য এটি হবে গেম চেঞ্জার।”
সব মিলিয়ে, স্টারলিংকের পদচারণা বাংলাদেশের প্রযুক্তি খাতে এক নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছে—যেখানে শহর ও গ্রাম সমানভাবে ডিজিটাল সুবিধা ভোগ করতে পারবে।