

ফিলিস্তিনের গাজা থেকে শুরু করে আফ্রিকার কঙ্গো প্রজাতন্ত্র পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন সংঘাতময় অঞ্চলে ২০২৪ সালে শিশুদের ওপর সহিংসতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জাতিসংঘের বার্ষিক এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) প্রকাশিত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের ওপর সহিংসতার ঘটনা ২৫ শতাংশ বেড়েছে, যা গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এতে দেখা গেছে, বছরজুড়ে শিশুদের বিরুদ্ধে ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৩৬ হাজার ২২১টি ঘটেছে চলতি বছরেই, আর ৫ হাজার ১৪৯টি আগের বছরের হলেও এই বছর যাচাই করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, সংঘাতে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি শিশু নিহত এবং কমপক্ষে ৭ হাজার জন আহত হয়েছে। নির্বিচার হামলা ও সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছে শিশুরা। অনেক শিশু একাধিক সহিংসতার শিকার হয়েছে, এমন ভুক্তভোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২ হাজার ৪৯৫ জনে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের শিশু ও সশস্ত্র সংঘাত বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ভার্জিনিয়া গাম্বা বলেন, “এই ২২ হাজার ৪৯৫ শিশুর এখন স্কুলে পড়া, মাঠে খেলাধুলা করার কথা। কিন্তু তারা শিখছে— কীভাবে গোলাগুলি আর বোমার মধ্যেও বাঁচতে হয়। এই শিশুদের আর্তনাদ আমাদের সবার রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার মতো।”
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “এটি যেন আমাদের জন্য একটা সঙ্কেত হয়। কারণ আমরা একেবারে সংকটসীমার কিনারায় পৌঁছে গেছি।”
জাতিসংঘ প্রতিবছর বিশ্বের প্রায় ২০টি সংঘাতময় অঞ্চলে ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতার তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকার একটি পরিশিষ্ট হিসেবে প্রকাশিত হয় তথাকথিত ‘লজ্জার তালিকা’, যেখানে শিশুদের ওপর সহিংসতার জন্য দায়ীদের নাম প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের ‘লজ্জার তালিকা’-তে নতুন করে যুক্ত হয়েছে হাইতির একটি সশস্ত্র গ্যাং জোট। তাদের বিরুদ্ধে শিশু হত্যা, অঙ্গহানি, অপহরণ, যৌন সহিংসতা ও মানবিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়াও এবারও তালিকায় রয়েছে ইসরায়েলি সশস্ত্র বাহিনী এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নাম।
সূত্র: এএফপি