দক্ষিণ এশিয়ায় আবারও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। উভয় দেশই সীমান্তে সেনা, ট্যাংক, যুদ্ধবিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করছে। সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতীয় নৌবাহিনী সমুদ্রপথে সফলভাবে একটি মিসাইল প্রতিরক্ষা পরীক্ষা চালিয়েছে।
পাল্টা পদক্ষেপে পাকিস্তানের ঘোষণা, বন্ধ হচ্ছে আকাশপথ ও বাণিজ্য
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক থেকে জানানো হয়—ভারতের সঙ্গে সমস্ত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধ করা হয়েছে। পাকিস্তান তার আকাশসীমা ভারতীয় বিমান চলাচলের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ভারতীয়দের দেওয়া সব ধরনের ভিসাও বাতিল করা হয়েছে। শুধুমাত্র শিখ তীর্থযাত্রীদের ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় থাকবে বলে জানানো হয়।
সীমান্তে যুদ্ধ সরঞ্জাম জড়ো করছে দুই দেশ
কাশ্মীর সীমান্তে উভয় পক্ষই বিপুল সংখ্যক সেনা এবং সামরিক সরঞ্জাম মোতায়েন করেছে। পাকিস্তান সীমান্তে তুরস্ক থেকে কেনা ড্রোন ‘বের্যাক্টার টিবি-২’ মোতায়েন করেছে। ভারতীয় সূত্রের দাবি, ফ্লাইট ট্র্যাকিং সাইট ‘ফ্লাইটরাডার২৪’-এর তথ্য অনুযায়ী পাকিস্তান উত্তরের ঘাঁটিগুলোতে বিমান সরিয়ে নিচ্ছে।
ভারতীয় নৌবাহিনীর সফল প্রতিরক্ষা পরীক্ষা
আইএনএস সুরাত নামক একটি যুদ্ধজাহাজ থেকে গতকাল ভারতীয় নৌবাহিনী স্বল্প উচ্চতায় উড়ে আসা একটি মিসাইলকে সফলভাবে ধ্বংস করে। ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় নতুন মাইলফলক যোগ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদির হুঁশিয়ারি: ‘সন্ত্রাসীদের ছাড় দেওয়া হবে না’
কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যারা এই হামলার সঙ্গে যুক্ত, তাদের এমন সাজা দেওয়া হবে যা কল্পনারও বাইরে। তিনি বলেন, “বিশ্বের যে প্রান্তেই তারা থাকুক, তাদের খুঁজে বের করা হবে।”
কাশ্মীরজুড়ে সেনাবাহিনীর অভিযান, দেড় হাজার গ্রেফতার
জম্মু-কাশ্মীর অঞ্চলে বড় পরিসরে সেনা অভিযান চালিয়ে প্রায় দেড় হাজার সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এক সংঘর্ষে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন সদস্যও নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান থেকে ভারতের কর্মকর্তাদের বহিষ্কার
ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে দেশত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তান। হাইকমিশনে কর্মরত অতিরিক্ত কর্মকর্তাদের সংখ্যাও ৩০-এ নামিয়ে আনার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের উদ্বেগ
পাকিস্তানের নিরাপত্তা বিশ্লেষক সৈয়দ মুহাম্মদ আলীর মতে, ভারতের সম্ভাব্য হামলা ২০১৯ সালের চেয়েও বড় হতে পারে। ভারত কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী আন্দোলনকে সন্ত্রাসবাদ হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
কংগ্রেসের দাবি: গোয়েন্দা ব্যর্থতার তদন্ত হোক
ভারতের বিরোধীদল কংগ্রেস পহেলগাম হামলার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতাকে দায়ী করে তদন্ত দাবি করেছে। কংগ্রেসের সর্বোচ্চ নেতাদের উপস্থিতিতে আয়োজিত এক বৈঠকে এই দাবি তোলা হয়।