
মোঃ শাহজাহান বাশার, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা মহেশখালী-মাতারবাড়ীকে ঘিরে গড়ে উঠতে যাচ্ছে দেশের এক নতুন অর্থনৈতিক কেন্দ্র। শুধু গভীর সমুদ্রবন্দর নয়, সেখানে গড়ে উঠবে একটি আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের শহর—এমনটাই আশা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (মিডা) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি বলেন,
“মহেশখালী-মাতারবাড়ী শুধু একটি বন্দরনগরী হবে না, বরং একটি নতুন শহরের জন্ম দেবে। সেখান থেকেই তৈরি হবে আমাদের আন্তর্জাতিক কানেক্টিভিটি। বাংলাদেশ নতুন এক দিগন্তে প্রবেশ করবে।”
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, সদস্য কমোডর তানজিম ফারুক ও মো. সারোয়ার আলম। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে মহেশখালী-মাতারবাড়ী উন্নয়ন প্রকল্পের ওপর একটি বিস্তারিত প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন মিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ। তিনি বলেন, সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে মহেশখালীকে শুধু শিল্প ও বাণিজ্যের কেন্দ্র নয়, পর্যটন এবং আধুনিক নগরায়নের কেন্দ্র হিসেবেও গড়ে তোলা হবে।
এ সময় তিনি আগামী চার মাসের কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। এতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি, সড়ক-নৌপথ যোগাযোগ সহজীকরণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণকে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গভীর সমুদ্রবন্দরকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মানের শিল্পায়ন ও বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে উঠবে। শুধু বাংলাদেশ নয়, এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গেও এর মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগের নতুন সুযোগ তৈরি হবে।
তিনি আরও বলেন,
“এটি হবে এমন একটি শহর যেখানে শিল্প, ব্যবসা, পর্যটন, আধুনিক আবাসন ও প্রযুক্তিনির্ভর সেবা একসাথে থাকবে। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতির রূপান্তরমূলক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।”
প্রফেসর ইউনূস জোর দিয়ে বলেন, মহেশখালী-মাতারবাড়ীর প্রকল্প কেবল একটি বন্দর নির্মাণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এর মাধ্যমে উপকূলীয় অঞ্চলজুড়ে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, আধুনিক অবকাঠামো গড়ে উঠবে এবং স্থানীয় জনগণের জীবনমান বদলে যাবে।
তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার দিকেও গুরুত্ব আরোপ করেন।