

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন। এই মামলায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত অপরাধের বিচার হবে।
মামলার আসামিরা হলেন—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক থাকলেও সাবেক আইজিপি মামুন বর্তমানে আটক রয়েছেন।
গত ১ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) আমলে নেয়। এর আগে ১২ মে তদন্ত সংস্থা থেকে জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করে একটি তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়।
আদালত বৃহস্পতিবার অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানি শেষে তিন আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরু করার নির্দেশনা দেয়। এর ফলে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারাধীন হলেন।
এই ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের সময় বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচার গুলি, নির্যাতন ও গুম–এই অভিযোগগুলো এখন বিচারিক প্রক্রিয়ার আওতায় আসছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও সরকারপন্থী কিছু গোষ্ঠী একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করছে।
তবে ট্রাইব্যুনাল সাফ জানিয়েছে, তারা নিরপেক্ষভাবে, সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করবে। আগামী মাস থেকে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।