শ্রম সংস্কার কমিশন দেশের শ্রম পরিবেশ উন্নয়নে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা পেশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে মাসিক ভিত্তিতে মজুরি পরিশোধ সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে বাধ্যতামূলকভাবে জমা দেওয়ার সুপারিশ।
গত সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মজুরি সংক্রান্ত স্বচ্ছতা ও নিয়মিত তদারকির জন্য মাসিক তথ্য জমা বাধ্যতামূলক করা উচিত। একই সঙ্গে মজুরি নিশ্চিত রাখতে প্রতিষ্ঠানসমূহের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় কিছু কাঠামোগত পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানসমূহে ক্যাশ ফ্লো বজায় রাখতে ব্যাংক ওভারড্রাফট, বাধ্যতামূলক আপদকালীন তহবিল (যার পরিমাণ কমপক্ষে তিন মাসের মজুরি) গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি, শ্রমিকদের পাওনা মজুরি যেন দেউলিয়া প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও প্রথমে পরিশোধ করা হয়, সে বিষয়ে দেউলিয়া আইন সংশোধনের সুপারিশও করা হয়েছে।
শ্রম সংস্কার কমিশন প্রস্তাব করেছে একটি ‘জাতীয় মজুরি নিশ্চয়তা বীমা স্কিম’ চালুর। এই স্কিমের আওতায় কোনো প্রতিষ্ঠান যদি মজুরি দিতে ব্যর্থ হয়, শ্রমিক ছাঁটাই বা পুনঃনিয়োগের সময় বেতনে হেরফের হলে, বীমা থেকে শ্রমিক তার পাওনা অর্থ পাবে।
বিশেষ করে রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য একটি আলাদা আপদকালীন তহবিল গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যেখানে শ্রমিকদের দুই মাসের মজুরির সমপরিমাণ অর্থ জমা রাখবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। এই তহবিল পরিচালনায় অংশগ্রহণ করবে সরকার, মালিকপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন।
গত ১৭ নভেম্বর গঠিত এই শ্রম সংস্কার কমিশনের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিআইএলএস)-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। দশ সদস্যের এই কমিশন বিভিন্ন পক্ষের মতামত নিয়ে সুপারিশ তৈরি করে।
দৈনিক নব জাগরণ/Daily Nobo Jagoron
Email : newsnobojagoron@gmail.com
Nobo Jagoron