অন্তর্বর্তী সরকার আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যকে প্রাধান্য না দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। অর্থ বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলমান অর্থনৈতিক সংকট সামলাতে বাজেটের আকার ছোট করা হবে, যা অর্থের সংস্থান সহজ করবে এবং বাজেট বাস্তবায়নের চাপ কমাবে।
সরকার নতুন কোনো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে না নিয়ে চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে অগ্রাধিকারভিত্তিতে অর্থ বরাদ্দ দেবে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, মূল্যস্ফীতির চাপ কমানোর পাশাপাশি বৈষম্য হ্রাস ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী সম্প্রসারণ ও কৃষি খাতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট সংশোধন করে ৭.৫ লাখ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে, যা আগের ৭.৯৭ লাখ কোটি টাকার তুলনায় কম। আগামী অর্থবছরের বাজেট আরও ছোট হতে পারে। সরকারের লক্ষ্য আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামিয়ে আনা, যা গত মাসে ১০ শতাংশের নিচে এসেছে।
করজাল বাড়ানোর মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে, তবে করহার বাড়ানোর পক্ষে নয় অর্থ বিভাগ। এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানিয়েছেন, করজালের আওতা বৃদ্ধিতে কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং টিআইএনধারীর সংখ্যা ইতিমধ্যে এক কোটি ছাড়িয়েছে।
সরকারের এ সিদ্ধান্তের পেছনে চলতি অর্থবছরের রাজস্ব ঘাটতির বিষয়টিও ভূমিকা রাখছে। প্রথম সাত মাসে এনবিআর প্রায় ১.৯৬ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করলেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার কোটি টাকা। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দাভাব দেখা দেওয়ায় আগামী অর্থবছরেও রাজস্ব আদায়ে চ্যালেঞ্জ থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ অবস্থায় বাজেটের আকার বড় করলে ঘাটতি আরও বাড়তে পারে, যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সরকার বাস্তবসম্মত বাজেট প্রণয়নের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।
নব জাগরণ/এইচ এইচ
দৈনিক নব জাগরণ/Daily Nobo Jagoron
Email : newsnobojagoron@gmail.com
Nobo Jagoron