

রাজধানীর রমনার বটমূলে শেষ হলো ছায়ানটের আয়োজিত ১৪৩২ বঙ্গাব্দের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। বছরের প্রথম সকালে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে শুধু আনন্দ আর সুর নয়, ধ্বনিত হলো মানবতার বার্তাও।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অনুষ্ঠানের শেষভাগে, গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় নিহত মানুষের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন শিল্পী ও দর্শনার্থীরা। এর পর সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।
ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, “ফিলিস্তিনে মানবতার বিপর্যয়ের প্রতিবাদে আমরা আজ এক হচ্ছি। গাজায় শিশুদের হত্যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা সেই নির্মমতার বিরুদ্ধে দাঁড়াচ্ছি।”
এ বছরের আয়োজনের মূলভাব ছিল— ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হওয়া ছায়ানটের ৫৮তম এই আয়োজন সাজানো হয় প্রকৃতি, ভালোবাসা ও আত্মবোধনের গান দিয়ে। মোট ২৪টি পরিবেশনার মধ্যে ছিল ৯টি সম্মেলক গান, ১২টি একক কণ্ঠ এবং তিনটি পাঠ।
আয়োজনটি সরাসরি সম্প্রচার করে ছায়ানটের ইউটিউব ও ফেসবুক পেজ। বিভিন্ন টেলিভিশনেও অনুষ্ঠানটি প্রচার হয়।
এবারের বর্ষবরণ মঞ্চ তৈরি হয় পূর্ব-পশ্চিমে অর্ধবৃত্তাকারে—৭২ ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট প্রস্থে। পাঁচটি ধাপে নির্মিত এই মঞ্চে প্রায় ১৫০ জন শিল্পীর সম্মিলনে নতুন বছরকে আহ্বান জানানো হয়।
প্রভাত থেকেই রমনায় ভিড় করেন নানা বয়সী মানুষ, বৈশাখী সাজে সজ্জিত হয়ে। সবার মুখেই ছিল নতুন বছরের শুভকামনা ও আশাবাদ—বিভেদ নয়, সাম্য ও ঐক্যের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়।
১৯৬৭ সাল থেকে ছায়ানট রমনার বটমূলে এই আয়োজন করে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নেয়া হলো মানবতার বার্তা ও সংস্কৃতির ঐক্যে।