

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে এতদিন ‘নৈর্ব্যক্তিক’ অবস্থান রাখলেও এবার স্পষ্ট বার্তা দিল চীন। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, “চীন ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার পরাজয় মেনে নেবে না। আমরা রাশিয়াকে হারতে দেব না।”
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান কাজা কালাসের সঙ্গে প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী এক বৈঠকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই মন্তব্য করেন।
ওয়াং ই বলেন,
“যদি রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে পরাজিত হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের পুরো মনোযোগ চলে আসবে চীন এবং এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ওপর। তখন চীন হবে ওয়াশিংটনের একমাত্র লক্ষ্যবস্তু।”
তবে তিনি দাবি করেন, চীন এখনো পর্যন্ত রাশিয়াকে কোনও সামরিক সহায়তা দেয়নি। তার ভাষায়,
“যদি চীন রাশিয়াকে সহায়তা করত, তবে এই যুদ্ধ অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত।”
দ্বিচক্রীয় বার্তা চীনের
যদিও পরদিন (শুক্রবার) চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এক ব্রিফিংয়ে জানান,
“রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে চীনের অবস্থান নৈর্ব্যক্তিক। আমরা চাই যুদ্ধ শেষ হোক কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে। কারণ যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে কারও লাভ নেই।”
ব্রাসেলসের ওই বৈঠকে শুধু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, সাইবার নিরাপত্তা, বিরল খনিজ উপাদান, এবং ইইউ-চীন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়েও আলোচনা হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চীনের প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনৈতিক প্রভাব এবং বাজার স্বচ্ছতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় বলে সূত্র জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ওয়াং ই-এর বক্তব্য চীনের ভেতরের কূটনৈতিক হিসাব-নিকাশকে প্রকাশ করে। বেইজিং চাইছে রাশিয়া টিকে থাকুক, যাতে ওয়াশিংটনের কৌশলগত চাপ কিছুটা হলেও ভাগাভাগি হয়। তবে চীন সরাসরি সামরিক সহায়তা না দিয়ে দ্ব্যর্থপূর্ণ অবস্থানে থেকেই নিজের কৌশলগত সুবিধা বজায় রাখতে চাইছে।
সূত্র: সিএনএন, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট, রয়টার্স