শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে শুষ্ক বসন্তে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, বৃষ্টির জন্য প্রার্থনায় কৃষকরা

print news
img

ব্রিটেন এই বছর শতাধিক বছরের মধ্যে সবচেয়ে শুষ্ক বসন্তকাল অতিক্রম করছে। গত মার্চ মাস থেকে এক ফোঁটাও বৃষ্টি না হওয়ায় চরম পানিসংকট দেখা দিয়েছে দেশজুড়ে, যা কৃষি উৎপাদনকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। এই পরিস্থিতিতে বৃষ্টির আশায় প্রার্থনায় বসছেন ব্রিটিশ কৃষকরা।

১৮৫২ সালের পর এই প্রথমবারের মতো বসন্তকাল এতটা শুষ্ক হয়ে উঠেছে। ব্রিটেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর পিটারবারোর কাছে ৪০০ হেক্টর জমির মালিক লুক অ্যাবলিট নিজের চিনির বিট ও আলুর খেতের দিকে অসহায়ভাবে তাকিয়ে আছেন। ফসল বেড়ে উঠতে পারছে না, কারণ চারপাশে শুধুই শুকনো মাটি।

রেকর্ডভাঙা খরা:

যুক্তরাজ্যের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা ‘মেট অফিস’ জানায়, মার্চ থেকে মে পর্যন্ত মৌসুমে মাত্র ৮০.৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে—যা ১৮৫২ সালের রেকর্ড ১০০.৭ মিলিমিটারেরও নিচে। ফলে এটি গত একশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে শুষ্ক বসন্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মে মাস শেষে চূড়ান্ত তথ্য হাতে এলে তা নিশ্চিত হবে।

জলাধার খালি, পানি সঙ্কট তীব্র:

যুক্তরাজ্যের পরিবেশ সংস্থা জানায়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের জলাধারে পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে গেছে। এ নিয়ে সংস্থাটি জাতীয় খরা বিষয়ক জরুরি সভাও ডেকেছে। সংস্থার উপপরিচালক রিচার্ড থম্পসন বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভবিষ্যতে এমন খরার ঘটনা নিয়মিত দেখা যাবে।”

পানি সরবরাহকারী সংস্থাগুলোর সংগঠন ওয়াটার ইউকে জানায়, এবছর এক অঞ্চল থেকে পানি অন্য এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে চাহিদা মেটাতে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব:

রয়্যাল মেটিওরোলজিক্যাল সোসাইটির প্রধান নির্বাহী লিজ বেন্টলি সতর্ক করে বলেন, “আগে যেখানে ১৬ বছরে একবার বড় খরা দেখা যেত, এখন তা ৫ বছর অন্তর হচ্ছে। আগামী দিনে এটি ৩ বছর অন্তরে ঘটতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, এর ফলে কৃষিপণ্যের উৎপাদন কমে যেতে পারে এবং বাজারে মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে।

কৃষকদের দুর্ভোগ:

ন্যাশনাল ফারমার্স ইউনিয়ন জানিয়েছে, কিছু কৃষক আগেভাগেই সেচ দিতে শুরু করেছেন, কিন্তু এই অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে খরচ বেড়ে যাবে এবং অনেক ছোট কৃষক টিকতে পারবেন না। সংগঠনটি পানি সংরক্ষণ ও সংগ্রহে দ্রুত বিনিয়োগ চাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *