অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দখলদার ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় আরও ৫১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে যুদ্ধবিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডে মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৩৬৫ জনে। তুরস্কের আনাদোলু বার্তা সংস্থা মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫১ জনসহ ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় মোট মৃতের সংখ্যা এখন ৫২ হাজার ৩৬৫।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আহত আরও ১১৩ জনকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এতে করে সংঘাতের শুরু থেকে এ পর্যন্ত আহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯০৫ জনে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এখনও বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে আছেন, কিন্তু উদ্ধারকর্মীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
দীর্ঘ ১৫ মাস ধরে চলা সামরিক অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল ইসরায়েল। এরপর প্রায় দুই মাস গাজায় relative শান্তি বজায় ছিল। তবে, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ইসরায়েল পুনরায় বিমান হামলা শুরু করে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি বিমান হামলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ২৭৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫ হাজার ৮০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। ইসরায়েলের এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘন করেছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের এই বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের অধিকাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়াও, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আগ্রাসনের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলার সম্মুখীন হয়েছে।