

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আগামী রবিবার দাখিল করা হবে। তিনি বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই বিচারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখা যাবে, এবং বিচারপ্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে প্রসিকিউশন টিম দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
শনিবার (৩১ মে) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তদন্ত ও গুমের ঘটনা নিয়ে অগ্রগতি
চিফ প্রসিকিউটর জানান, ১০ থেকে ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ গুমের ঘটনার তদন্ত ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, এবং জুন মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, “বিচারের কাজ পুরোদমে এগোচ্ছে। তবে তদন্তে কিছু যুক্তিসংগত সময় লাগছে। অপরাধের কাঠামো এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মোটাদাগে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।”
গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কিছু বাধা
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, “গুমের সঙ্গে যারা সরাসরি জড়িত, তাদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কিছুটা আইনি ও কৌশলগত বাধা রয়েছে। আমরা তা অতিক্রম করার চেষ্টা করছি।”
আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও মানবাধিকার
তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, “বিচারের নামে যেন কোনো অবিচার না হয়, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখেই বিচার পরিচালনা করা হবে।”
প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার সরকারের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ একাধিক অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে দেশি-বিদেশি সংগঠনগুলো তুলে ধরে আসছিল। এই প্রথমবারের মতো এসব অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার প্রক্রিয়ায় গড়াচ্ছে।
এদিকে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ শুধু আইনি নয়, বরং রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনার সরকারের সময়কালের দায় ও দায়িত্ব নির্ধারণের ক্ষেত্রে এটি একটি মোড় পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে।