

সাভারের কাঁঠালবাগান এলাকায় বাবাকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগে এক তরুণীকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোরে পৌরসভার মজিদপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাট থেকে মৃতদেহ উদ্ধার এবং তরুণী জান্নাতুল জাহান শিফাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ৯৯৯-এ একটি ফোন কল থেকে। পুলিশের ভাষ্য, তরুণী নিজেই জাতীয় জরুরি সেবায় ফোন করে বলেন— তিনি তার বাবাকে হত্যা করেছেন এবং আত্মসমর্পণ করতে চান। পরে সাভার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং শিফাকে হেফাজতে নেয়।
নিহত ব্যক্তি আবদুস সাত্তার (৫৫) নাটোর জেলার সিংড়া থানার ভগা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মেয়েকে নিয়ে সাভারে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং অনলাইনে কাপড়ের ব্যবসা করতেন।
তরুণীর দাবি অনুযায়ী, তার বাবা ২০১৯ সাল থেকে তাকে যৌন নিপীড়ন করে আসছিলেন। ২০২২ সালে তিনি নাটোরে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছিলেন, যেখানে দীর্ঘদিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হন তার বাবা। তরুণী অভিযোগ করেন, জামিনে মুক্ত হওয়ার পর ফের তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তিনি প্রতিশোধ নেন। খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে ভোররাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাবাকে হত্যা করেন।
সাভার মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জুয়েল মিঞা জানান, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে তরুণীকে গ্রেপ্তার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
তদন্তে জানা যায়, তরুণীর মা ছিলেন মৃতের তৃতীয় স্ত্রী। তিনি মারা যান যখন মেয়ের বয়স ছিল পাঁচ বছর। এরপর থেকেই মেয়েকে নিয়ে একসাথে বসবাস করতেন আবদুস সাত্তার। ধর্ষণ মামলার পর মেয়েকে মামলা প্রত্যাহারে চাপ দেন এবং পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি জটিল এবং সামাজিক-মানসিক আঙ্গিক থেকেও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে।