দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থাকে (সার্ক) আরও কার্যকরভাবে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ও নেপালের অবস্থান অভিন্ন বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী।
রবিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-নেপাল বন্ধন : নতুন উচ্চতার দিকে’ শীর্ষক সেমিনারে এই কথা বলেন তিনি। রাজধানীর বিস মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাষ্ট্রদূত ভান্ডারী।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে সর্বশেষ সার্ক সম্মেলন নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে আর কোনো সামিট অনুষ্ঠিত হয়নি। সে সময় থেকেই নেপাল সার্কের চেয়ারের দায়িত্ব পালন করছে। যদিও সার্কের টেকনিক্যাল কমিটি ও ওয়ার্কিং গ্রুপগুলো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু রাজনৈতিক পর্যায়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। সদস্য দেশগুলোর সম্মতি ছাড়া সামিট বা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তবে সার্ককে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও নেপালের অবস্থান এক বলেও জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ ও নেপাল ভৌগোলিক নৈকট্য, ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং অর্থনৈতিক বন্ধনে আবদ্ধ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, সংযোগ, জ্বালানি সহযোগিতা এবং জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। এই অংশীদারিত্ব দুই দেশের উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক একীকরণের সম্ভাবনা বহন করে।
তিনি উল্লেখ করেন, স্থলবেষ্টিত নেপাল বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে লাভবান হতে পারে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ তার ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে নেপালের নবায়নযোগ্য জলবিদ্যুৎ আমদানির মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে। এ ছাড়া ভৌত সংযোগ, বিশেষ করে সড়ক, রেল এবং বিমান যোগাযোগ— এই দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বড় সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের জায়গা হিসেবে চিহ্নিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. নিলয় রঞ্জন বিশ্বাসসহ অন্যান্য বক্তারা উন্মুক্ত আলোচনায় বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-নেপাল অংশীদারিত্ব আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। উভয় দেশ একক নির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক সম্পর্ক বৈচিত্র্যময় করার চেষ্টা করছে। এ অংশীদারিত্ব বাস্তবভিত্তিক কূটনীতির একটি মডেল হয়ে উঠতে পারে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গাউসুল আজম সরকার। স্বাগত বক্তব্য দেন বিস মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইফতেখার আনিস।
দৈনিক নব জাগরণ/Daily Nobo Jagoron
Email : newsnobojagoron@gmail.com
Nobo Jagoron