২০০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজদের নাম প্রকাশ করুন: জয়নুল আবদিন ফারুকের সরকারের উদ্দেশ্যে আহ্বান

print news
img

বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, চাঁদাবাজদের ধরার উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও ২০০০ কোটি টাকা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের নাম এখনই প্রকাশ করা উচিত। তিনি বলেন, গত ১১ মাসে কে কী করেছে, তা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে।

বুধবার (৩১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

নির্বাচন বিলম্বে ক্ষোভ

ফারুক বলেন, বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় আসার ১১ মাস পার হলেও এখনও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি, যা জনগণের প্রত্যাশার পরিপন্থী। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মাত্র তিন মাসের মধ্যে এরশাদের ১০ বছরের দমন-নিপীড়নের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচন দিয়েছিলেন। অথচ এখন ১১ মাস পার হলেও নির্বাচন বিলম্বিত হচ্ছে।

রাজনৈতিক ইতিহাস ও বিএনপির ভূমিকা

তিনি বলেন, “আমাদের নেতা শহীদ জিয়া দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া এরশাদের বিরোধী আন্দোলনে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অংশ নিয়েছেন। স্বাধীনতার ঘোষকের সন্তান তারেক রহমান ১৬ বছর দেশের বাইরে থেকেও গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছেন। তরুণ নেতাদের দিয়ে আমরা আন্দোলন সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করে হাসিনাকে বিদায় করেছি। কিন্তু সেই বিদায়ের ১১ মাসেও আমরা কাঙ্ক্ষিত ফল পাইনি।”

জামায়াত প্রসঙ্গে বক্তব্য

ফারুক জামায়াত ইসলামকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনারা একসময় আমাদের বন্ধু ছিলেন। দিল্লির বিরুদ্ধে লড়াইয়েও আমরা একসঙ্গে ছিলাম। কিন্তু যখন বিএনপির নেতৃত্বে নির্বাচন প্রস্তুতির পর্যায়ে এল, তখন কিছু রাজনৈতিক দল নানা অজুহাত দিয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে—কখনও বলছে পিআর, কখনও সংবিধান সংশোধনের কথা। এসব জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।”

চাঁদাবাজি ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে অভিযোগ

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, “আমাদের কর্মীরা যদি ভুল করে, তারেক রহমান নিজেই ব্যবস্থা নিয়েছেন, বহিষ্কারাদেশ দিয়েছেন। তারপরও আমাদের বদনাম দেওয়া হচ্ছে। অথচ দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ-যুবলীগ।”
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “দুই কোটি টাকার চাঁদাবাজদের ধরেছেন ভালো কথা, কিন্তু ২০০০ কোটি টাকার চাঁদাবাজদের খবর আপনাদের কাছেই আছে। তাদের নাম প্রকাশ করুন এবং গত ১১ মাসে কে কী করেছে তা জনগণকে জানান।”

নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি

ফারুক জোর দিয়ে বলেন, “আমরা আর হাসিনার দিনের ভোট রাতে করে ক্ষমতায় যেতে চাই না। আমরা চাই নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি জনগণের ভোটে সরকার গঠন করুক। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে। তাই দ্রুত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করুন। দেশে আর অস্থিতিশীলতা বাড়াবেন না।”

ভবিষ্যতের প্রত্যাশা

তিনি আশা প্রকাশ করেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার গঠন হলে বাংলাদেশ আবারও গণতন্ত্রের পথে ফিরবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের নাম ইতিহাসে ইতিবাচকভাবে লেখা থাকবে।

সভায় উপস্থিত অতিথিরা

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি ডাক্তার এম ইসলাম বাদল তালুকদার। এ সময় বিএনপি’র প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, তাঁতি দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, লায়ন সোলায়মান তালুকদার, রফিকুল ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *