৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে ফিরেছেন জেলেরা, দ্বিতীয় কিস্তির চাল না পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন কুতুবদিয়ার জেলেরা

print news
img

গত ১২ জুন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টায় শেষ হয়েছে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ৫৮ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। এ সময়কালে সরকার নিবন্ধিত জেলেদের জন্য মোট ৮৬ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিলেও কুতুবদিয়ার জেলেরা এখনও পাননি দ্বিতীয় কিস্তির ৩০ কেজি চাল। যদিও প্রথম কিস্তিতে ৫৬ কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছিল, তারপর থেকে দ্বিতীয় কিস্তির অপেক্ষায় রয়েছেন জেলেরা।

মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কুতুবদিয়া উপজেলায় নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ১০ হাজার ৯৫৯ জন। তবে বাস্তবে অনিবন্ধিত জেলের সংখ্যা তার দ্বিগুণ বলে জানা গেছে। এই দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞার সময় সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় চরম অভাব-অনটনের মধ্যে দিন কাটিয়েছে এসব পরিবার। কষ্টের সময় সরকারি সহায়তা না পৌঁছানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে।

জেলেরা অভিযোগ করেন, বেশিরভাগ পরিবারে বড় সন্তান না থাকায় স্বামী সাগরে গেলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। কেউ কেউ বলছেন, দেরিতে সহায়তা আসলে তার প্রয়োজনীয়তা থাকে না, কারণ তখন জেলেরা আবার আয় শুরু করে দেয়।

কুতুবদিয়া উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব বলেন, “দ্বিতীয় কিস্তির চাল বিতরণের বিষয়ে এখনও কোনো সরকারি নির্দেশনা পাইনি। নির্দেশনা পেলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে।”

এদিকে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে কঠোর ছিল প্রশাসন। কুতুবদিয়া উপজেলায় ৫৬টি অভিযানে জব্দ হয়েছে ৪০২টি বেহুন্দি জাল, ৩২৪০ লাখ মিটার অন্যান্য জাল ও ২৪টি মাছ ধরার নৌকা। ১.৬২ মেট্রিক টন মাছও জব্দ করা হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীও ২৭৫টি অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩৬ লাখ মিটার কারেন্ট জালসহ ৫০৫ জন জেলেকে আটক করে।

অভিযানকালে জব্দ হওয়া মাছ এতিমখানায় বিতরণ ও অবৈধ জাল ধ্বংস করা হলেও, বৈধ জেলেরা সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় বঞ্চনার শিকার হয়েছেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এ অবস্থায় জেলেদের অনুরোধ, ভবিষ্যতে সরকারি সহায়তা যেন সময়মতো ও সরাসরি পৌঁছায়—এমন একটি বাস্তবধর্মী ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *