দুশ্চিন্তায় কর্টিসল (Cortisol) হরমোন বেড়ে যায়। কর্টিসল দীর্ঘদিন বেশি থাকলে পেটের মেদ জমে, পেশি ক্ষয় হয় এবং ওজন কমানো বা মাংসপেশি গঠন কঠিন হয়ে পড়ে। দুশ্চিন্তার কারণে ঘুম কমে যায় বা ঘুম ভাঙা-ভাঙা হয়। কম ঘুম মানে শরীরের রিকভারি (Recovery) বন্ধ হয়ে যাওয়া, ফলে পেশি গঠনে বাধা, ক্লান্তি, ও অনুশীলনে দুর্বলতা দেখা দেয়।অনেকেই দুশ্চিন্তায় অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড, মিষ্টি বা বেশি খাওয়া শুরু করে। আবার কেউ কেউ একেবারেই কম খেতে শুরু করে। দুই অবস্থাই শরীরের ফিটনেসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। দীর্ঘমেয়াদি দুশ্চিন্তা ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে।
ফলে ছোটখাটো অসুখে বারবার আক্রান্ত হওয়া যায়, যা ফিটনেসকে ব্যাহত করে।
মনোবিজ্ঞানী রবার্ট লিহির The Worry Cure বইয়ে উল্লেখিত একটি গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা দুই সপ্তাহ ধরে তাদের দুশ্চিন্তার তালিকা লিখে রেখেছিলেন। দেখা যায়, ৮৫% দুশ্চিন্তাই কখনো সত্যি হয়নি। আর বাকি ১৫% এর মধ্যে প্রায় ৭৯% আসলে প্রত্যাশার চেয়ে ভালোভাবে ঘটেছে। অর্থাৎ, বাস্তবে মাত্র ৩% দুশ্চিন্তা খারাপভাবে ঘটেছিল।
পেনসিলভানিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় Generalized Anxiety Disorder (GAD) রোগীদের উপর পরীক্ষা চালানো হয়। তাদেরকে ১০ দিন ধরে দিনে কয়েকবার তাদের দুশ্চিন্তা লিখতে বলা হয়েছিল এবং ৩০ দিন পর যাচাই করা হয় এগুলো সত্যি হয়েছিল কি না।
ফলাফল ছিল আরও চমকপ্রদঃ প্রায় ৯১.৪% দুশ্চিন্তা কখনোই সত্যি হয়নি। যেগুলো সত্যি হয়েছিল, তারও প্রায় এক-তৃতীয়াংশ প্রত্যাশার চেয়ে ভালোভাবে শেষ হয়েছিল।
এখান থেকে আমরা যা শিখতে পারি তা হলো আমাদের দুশ্চিন্তার বড় অংশই কল্পনা, বাস্তব নয়। যেগুলো সত্যি হয়, সেগুলোও অনেক সময় আমাদের কল্পনার চেয়ে ভালোভাবে সামলানো যায়।
নিজের দুশ্চিন্তা লিখে রাখা খুব উপকারী, এতে বোঝা যায় আসলে কত কম দুশ্চিন্তা বাস্তবে ঘটে।
সূত্র: The Worry Cure বইয়ে উল্লেখিত গবেষণা
দৈনিক নব জাগরণ/Daily Nobo Jagoron
Email : newsnobojagoron@gmail.com
Nobo Jagoron