

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটির প্রাক্কালে দেশের আন্তঃব্যাংক কল মানি মার্কেট স্থিতিশীল রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সময়োপযোগী তারল্য সহায়তার ফলে ব্যাংকগুলো নগদ অর্থ ব্যবস্থাপনায় সাফল্য দেখিয়েছে।
গত বুধবার কল মানির গড় সুদের হার ছিল ১০.৪৪ শতাংশ, যা আগের দিনের ১০.৩৯ শতাংশ থেকে কিছুটা বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে এ হার ছিল ১০.০৬ শতাংশ। তবে অধিকাংশ লেনদেন ১০.০০ থেকে ১০.৫০ শতাংশের মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে, যা বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়।
ঈদকে ঘিরে নগদ টাকার চাহিদা বাড়লেও বুধবার মোট লেনদেন কমে দাঁড়ায় ৩১,২৫০ কোটি টাকায়, যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কম। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪৪,৭১০ কোটি টাকা এবং এক সপ্তাহ আগের লেনদেন ছিল ৩৬,০৯০ কোটি টাকা।
মতিঝিল, দিলকুশা ও অন্যান্য বাণিজ্যিক এলাকায় ব্যাংকে গ্রাহকদের ভিড় দেখা গেলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তরলতা সহায়তা ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো ও বিশেষ স্কিমের আওতায় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বাজারে সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধান।
তবে নগদ টাকার অতিরিক্ত চাহিদার কারণে নতুন নোট সরবরাহে কিছুটা চাপ দেখা গেলেও, বাংলাদেশ ব্যাংক ঈদের ছুটির সময় বিকল্প ব্যাংকিং চ্যানেল যেমন—এটিএম, পয়েন্ট অব সেল, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস চালু রাখতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।
এক বাজার বিশ্লেষক বলেন, “নগদের চাপ কমছে কারণ মানুষ এখন ডিজিটাল লেনদেনের ওপর বেশি নির্ভর করছে।” বর্তমানে দেশে ৪.১ কোটির বেশি ডেবিট কার্ড ও ২৫.৭ লাখের বেশি ক্রেডিট কার্ড চালু রয়েছে। এছাড়া মোবাইল মানি, এজেন্ট ব্যাংকিং ও অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহারে প্রবণতা বাড়ছে, বিশেষ করে উৎসবকেন্দ্রিক সময়ে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত তফসিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। তবে রপ্তানি কার্যক্রম এবং শিল্প এলাকার শ্রমিকদের বেতন প্রদানের জন্য ৫, ১১ ও ১২ জুন নির্দিষ্ট এলাকায় সীমিত আকারে ব্যাংকিং চালু থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, ঈদের পর তারল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে কল মানির হার কিছুটা কমে আসবে।