

মোঃ শিহাব উদ্দিন, গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ‘জুলাই পদযাত্রা’কে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে ভয়াবহ সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে শহরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত ও অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত ঘটে এনসিপির সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের গাড়িবহরে হামলার পর। অভিযোগ রয়েছে, গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া সড়কে গাছ ফেলে এবং টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে এনসিপির গাড়িবহরে হামলা চালায় নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশের বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জীবিতেশ বিশ্বাস জানান, “গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন এবং একজন এখনও চিকিৎসাধীন।” নিহতদের মধ্যে পরিচয় পাওয়া গেছে গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের দীপ্ত সাহা (২৫) ও কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮)-এর। অপর নিহত ব্যক্তির পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষ চলাকালে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, গাড়ি ভাঙচুর ও জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে এদিন গোপালগঞ্জে এনসিপি পদযাত্রার আয়োজন করেছিল। দেশের অন্যান্য জেলায় কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হলেও গোপালগঞ্জে তা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এদিকে সহিংসতার পর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এনসিপির পক্ষ থেকে দোষীদের শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনার তদন্ত করছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।