

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ।
রায়ে বলা হয়েছে, আবেদনকারী এসব কর্মকর্তাকে ২০০৭ সালে বরখাস্তের পর থেকে প্রাপ্য বকেয়া বেতন-ভাতা জ্যেষ্ঠতাসহ ফেরত দিতে হবে। এছাড়া বরখাস্তকালীন সময়কে বিশেষ ছুটি হিসেবে গণ্য করতে হবে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ ১৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেন।
এর আগে ২০২২ সালে আবেদনকারীদের আপিল খারিজ করে দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করা হলে, গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন। আজ সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হলো।
আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন, প্রবীর নিয়োগী ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক এবং নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।
পটভূমি
২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাদের মূল্যায়ন পরীক্ষা নিলে ৮৫ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল তাদের আবেদন খারিজ করে। তবে ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেয়।
পরে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করলে ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ পুনর্বহাল রায় বাতিল করে দিলে কর্মকর্তারা ফের আটকে যান।
পরবর্তীতে ২০২৩ সালে পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন বরখাস্ত কর্মকর্তারা। সেই আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সালে আপিল বিভাগ তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেয়, যার পূর্ণাঙ্গ রায় আজ প্রকাশিত হলো।