ফু-ওয়াং ফুডস: উৎপাদন বন্ধ, শ্রমিক অসন্তোষ ও আর্থিক অনিয়মে বিপাকে কোম্পানি

print news
img

বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ফু-ওয়াং ফুডসের উৎপাদন কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। নিয়ম থাকা সত্ত্বেও, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে কোম্পানিটি মূল্য সংবেদনশীল কোন তথ্য প্রদান করেনি। বেতন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, এবং পরিবেশকদের টাকা লোপাট ও সরবরাহকারীদের পাওনা পরিশোধ না করার মাধ্যমে কোম্পানির দায়-দেনা বাড়ছে। এর ফলে, কোম্পানিটি এখন প্রায় বন্ধের পথে।

ফু-ওয়াং ফুডসের রয়েছে প্রায় ৫৬টি জনপ্রিয় খাদ্য পণ্য, যার মধ্যে কেক, বিস্কুট ও বান অন্যতম। এসব পণ্যের বাজারে ভালো চাহিদা থাকা সত্ত্বেও উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণে ব্যবসায়িক পরিস্থিতি সংকটজনক।

কোম্পানিটি ৯ ফেব্রুয়ারি এক অফিস আদেশে উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দেয়। ২৮ মার্চ পর্যন্ত উৎপাদন চালু রাখার কথা থাকলেও, বাস্তবে বেশিরভাগ সময় তা বন্ধ থাকে। শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত একটি কোম্পানি হিসেবে উৎপাদন বন্ধের কারণ ডিএসইকে জানানো হয়নি, যা তালিকাভুক্তি আইনের পরিপন্থী। এই কারণে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা পোষণ করছে।

শ্রমিকদের বেতন বন্ধ রাখা, দক্ষ কর্মী ছাঁটাই করা, এবং কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ করার প্রচেষ্টা দেখতে পেয়ে মার্চ মাসে শ্রমিকরা দুই দফা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফু-ওয়াং ফুডসের শ্রমিক জানান, “লভ্যাংশের টাকা পাই না, প্রোভিডেন্ড ফান্ডের টাকা পাই না। জমা করা টাকারও কোনো খবর নেই, সব টাকা আত্মসাত করা হচ্ছে।”

২০২৩ সালে কোম্পানির ডিলারদের কাছ থেকে পণ্য বিক্রির মাধ্যমে ২ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু এই টাকার কোনো হিসাব মূল ক্যাশ বইয়ে দেখানো হয়নি। এর বদলে, কোম্পানির হিসাব বিভাগে হাতে লেখা রেজিস্ট্রারে এসব টাকা লিপিবদ্ধ করা হয়। এমনকি, পরিবেশকদের টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে ক্যাশে দেয়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। ১৫ এপ্রিল থেকে ২০ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত ১৫ দফায় মোট ১ কোটি ৯৫ লাখ ১৭ হাজার ৭৪ টাকার টাকার অংক কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুন তুলে নেন।

ফু-ওয়াং ফুডসের এই অনিয়ম এবং সংকটজনক পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *