আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থী অবন্তিকার মৃত বাবাকে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন, হতবাক পরিবার

print news
img

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মৃত বাবাকে কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ঘিরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়।

মঙ্গলবার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৫ জন কর্মকর্তাকে বিভিন্ন কলেজে পদায়ন করা হয়। তার মধ্যে কুড়িগ্রামের মীর ইসমাইল হোসেন কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয় মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনকে—যিনি ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল মারা গেছেন।

অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বলেন, “তালিকা প্রকাশের পর প্রজ্ঞাপনটি হাতে পেয়ে আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। আমার স্বামী মারা যাওয়ার প্রায় দুই মাস পর একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পদোন্নতি বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছিল। তখনই আমি জানিয়েছিলাম, তিনি মৃত।”

তিনি আরও বলেন, “জীবনভর তোষামোদি না করায় তিনি অধ্যক্ষ পদে পদায়ন পাননি। আজ মারা যাওয়ার এক বছর পর সেই পদায়ন দেখে বড় বেদনা হচ্ছে।”

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মির্জা মো. নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, “জামাল উদ্দীন আমাদের কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। তিনি ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। এটা পরিষ্কার প্রশাসনিক ভুল।”

মেধাবী কন্যার করুণ পরিণতি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র মো. জামাল উদ্দীনের একমাত্র কন্যা অবন্তিকা ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী। গত বছরের ১৫ মার্চ রাতে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী এবং সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে মানসিক হয়রানি ও প্ররোচনার অভিযোগ তোলেন তিনি।

এরপর দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও বর্তমানে তারা জামিনে মুক্ত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় বিধি অনুযায়ী শাস্তি কার্যকরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

শিক্ষাজীবনের শেষ সফলতার খবর জানা হয়নি

তাহমিনা শবনম বলেন, “আমার মেয়ে মৃত্যুর আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়েছিল। গত বছরের ১৯ মে ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায়, সে সিজিপিএ ৩.৬৫ পেয়ে বিভাগে তৃতীয় হয়েছে। কিন্তু সে তার এই প্রাপ্য সাফল্যের খবরটিও জানতে পারেনি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *